শহীদ কর্নেল এলাহী মঞ্জুর চৌধুরী সড়কের বেসিনেও নেই পানি ও সাবান

সুনামগঞ্জে করোনার সংক্রমণ রোধে পথচারীদের হাত ধোয়ার জন্য পৌর শহরসহ ১১টি উপজেলা সদরে হাত ধোয়ার জন্য বেসিন স্থাপন করা হয়েছে। জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের অর্থায়নে এই বেসিনগুলো স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু এগুলোর এখন বেহাল। কোনোটিতে নেই পানি তো কোনোটিতে নেই সাবান। এতে সরকারি অর্থায়নে নির্মিত এই বেসিনগুলো কোনো কাজেই আসছে না বলে জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ।

জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জনসাধারণের হাত ধোয়ার জন্য এই বেসিনগুলো স্থাপন করা হয়েছে। পৌর শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে ৮টি বেসিন নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় তিনটি করে দেওয়া হয়েছে। জেলায় ৪৭টি বেসিন নির্মাণ করা হয়েছে। একটি বেসিন নির্মাণ করতে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এতে মোট খরচ হয়েছে ১১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।

জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের সামনের বেসিনে পানি আছে, সাবান নেই

সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী জানান, সরকার সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসচেতনতায় অনেক কাজ করে। কিন্তু স্থানীয় সরকার সেগুলো ঠিকভাবে তদারকি করছে না। শহরের বিভিন্ন জায়গায় হাত ধোয়ার বেসিন স্থাপন করা হয়েছে। উদ্বোধনের পর কিছুদিন ভালো চলেছে। এরপর সেগুলো অকেজো হয়ে গেছে। কোনোটিতে পানি আসে না। কোনোটিতে পানি থাকলে সাবান থাকে না।

সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের সামনে বেসিনে পানি এলেও সাবান নেই। একই অবস্থা এই বেসিনগুলোর তদারকি দফতর সুনামগঞ্জ পৌরসভার। পৌর ভবনের পাশে নির্মিত বেসিনে পানি এলেও সাবানের দেখা মেলেনি। শহরের হোসেন বখত চত্বরের বেসিনের আরো বেহাল। পানি ও সাবান নেই। আছে দুর্গন্ধ। শহীদ কর্নেল এলাহী মঞ্জুর চৌধুরী সড়কের বেসিনেও নেই পানি ও সাবান। ভেতরে জমে আছে আবর্জনার স্তূপ। জেলা চেম্বার অব কমার্স অফিসের সামনের বেসিনেরও একই দশা। এখানেও পানি-সাবানের অনুপস্থিতি। কাজীর পয়েন্টের বেসিনে পানি থাকলেও নেই সাবান।

পৌরসভার প্রবেশপথে হাত না ধুয়ে কেন প্রবেশ করছেন, সফর আলী নামের একজনকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, বেসিন লাগানো হয়েছে, এ পর্যন্তই শেষ। প্রথম দিকে সবকিছু থাকলেও এখন আর কোনো গুরুত্ব নেই। সেখানে যে হাত ধুব, তেমন কিছু নেই। তাই হাত না ধুয়েই প্রবেশ করছি।

জেলা চেম্বার অব কমার্স অফিসের সামনের বেসিনে পানি ও সাবান নেই

 

স্বপন খান নামের আরেকজন বলেন, করোনা প্রতিরোধে কিছুক্ষণ পরপর হাত ধোয়া জরুরি। মানুষের হাত ধোয়ার সুবিধার জন্য হাজার হাজার টাকা খরচ করে বেসিন বসানো হয়েছে শুধু দেখানোর জন্য? বেসিনে সাবান ও পানি থাকে না।

জেলা সদরের মনির হোসেন বলেন, জনসাস্থ্য অধিদপ্তর প্রকৌশলী অফিসের সামনে সাধারণ মানুষের হাত ধোয়ার জন্য বেসিন বসানো হয়েছে। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে বেসিনে পানির ব্যবস্থা আছে কিন্তু সাবান নেই। যে কারণে মানুষ হাত ধুতে পারছে না।

জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবুল কাশেম বলেন, আমরা শহরের বিভিন্ন জায়গায় ৮টি হাত ধোয়ার বেসিন স্থাপন করেছি। সেগুলো দেখার দায়িত্ব পৌরসভার। অন্যান্য উপজেলায় থানা ও উপজেলা পরিষদের সামনে নির্মিত হয়েছে বেশির ভাগ। সেগুলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দেখাশোনা করার কথা। আমাদের বেসিনের সাবান না থাকলে আরেকটা দেব।

পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মীর মোশাররফ হোসেন বলেন, পৌরসভার সামনের বেসিনে প্রথমের দিকে সাবান দিয়েছিলাম কিন্তু সেখানে সাবান থাকে না। আর সাবান দিয়ে হাত ধোয়া লাগবে, এটি সবাই জানে, তবে কেউ মানে না। সাবান চুরিও হয়ে যায়। মানুষেরও নিজ থেকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

শহরের বাকি বেসিনগুলোতে পানি ও সাবান নেই কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে বেসিনগুলো অচল হয়ে গেছে, সেগুলো খোঁজ নিয়ে সচল করার ব্যবস্থা করব। কালকের মধ্যে সব বেসিনে পানি সরবরাহের উদ্যোগ নেয়া হবে। এ ছাড়া বেসিনে সব সময় কীভাবে সাবান রাখা যায়, আমরা সে ব্যবস্থা করছি।

এনএ