নীলফামারীর সৈয়দপুর মহিলা মহাবিদ্যালয়ের খালেদা জিয়া ছাত্রী নিবাসটি জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এটি দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে কোনো ধরনের সংস্কার ছাড়া পরিচালিত হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভবনটির অবকাঠামোও নাজুক হয়ে পড়েছে।

বুধবার (২৬ নভেম্বর) সকালে সৈয়দপুর মহিলা মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রী নিবাসে এমন চিত্র দেখা যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের জীবন ঝুঁকিসহ ভবনের দেয়ালে দেখা দিয়েছে ফাটল, স্যাঁতসেঁতে হয়ে পড়েছে কক্ষগুলো। নষ্ট হয়ে গেছে শৌচাগার ও পাইপলাইনসহ নানা সুবিধা। অনেক জায়গায় ছাদের প্লাস্টার খসে পড়ছে। অনেক জায়গায় ফ্যানের প্লাস্টার খুলে যাওয়ায় অনেকে টেবিল ফ্যান ব্যবহার করছে। ভবনটি জরাজীর্ণ হওয়ায় সেখানে কমতে শুরু করেছে ছাত্রীর সংখ্যা।

স্থানীয় ও কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৫ সালে কলেজের ছাত্রী নিবাসের কাজ শুরু করা হয়। সে সময়ের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নামে নামকরণ করা হয় খালেদা জিয়া ছাত্রীনিবাস। রাজনৈতিক নানা জটিলতার কারণে সেটির কাজ ধমকে দাঁড়ালেও ২০০৩ সালে সেটি উদ্বোধন করা হয়। তবে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরে ছাত্রীনিবাসটিতে কোনো সংস্কার বরাদ্দ হয়নি। এত বছর কোনো রকমের সংস্কার না হওয়ার কারণ জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে ছাত্রী নিবাসটি। আগের তুলনায় কমেছে ছাত্রীর সংখ্যা।

সিদ্দিকা নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা খুব ভয়ে আছি, এখানে স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ আমাদের ভালো লাগে না। আমরা ঠিকমতো পাইপলাইনের পানি পাই না।

আরেক শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, অন্য কলেজের মতো আমাদের ছাত্রাবাসটি আধুনিক নয়। আমরা সবকিছু আধুনিক পেলেও এখানের ভবনটি এখনো আধুনিক হয়নি সংস্কারের কারণে। গরমের সময়ে আমাদের নিজস্ব টেবিল ফ্যান ব্যবহার করতে হয়।

শিক্ষার্থী সুলতানা আক্তার বলেন, আমাদের ছাত্রী নিবাসটি থাকার মত নয় সেখানে আমরা অনেক কষ্ট করে আছি। আমাদের ভবনটির রং অনেক আগে নষ্ট হয়েছে তবুও কোনো রকমের সংস্কার করা হয়নি৷

সৈয়দপুর মহিলা মহাবিদ্যালয়ের প্রভাষক শিউলী বেগম বলেন, কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজন মানসম্মত পরিবেশ। যেখানে শিক্ষার্থীরা থাকবেন সেখানের পরিবেশ হতে হবে মনোরম তাহলে শিক্ষার্থীরা পাঠদানে মনোযোগী হতে পারবে। দীর্ঘ সময় ধরে নানা কারণে আমাদের ছাত্রীনিবাসটি সংস্কার করা হয়নি। তবে শুধু ছাত্রীনিবাস নয় আমাদের কলেজে কোনো ধরনের ভবনের বরাদ্দ হয়নি। ক্লাসরুম সংকটে শিক্ষার্থীদের পাঠদান বিঘ্ন ঘটছে। এখানে আধুনিক ব্যবস্থা না থাকার কারণে ছাত্রীরা নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।

কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শাহিদ সাহাব বলেন, নানা সময়ে আমরা কলেজের ছাত্রীনিবাস সংস্কার বরাদ্দের জন্য আবেদন করেছিলাম। একবার বরাদ্দ হলেও খালেদা জিয়া নাম থাকার কারণে সেটি বাতিল করা হয়। অন্য কলেজের শিক্ষার্থী নিবাসের থেকে এটি নাজুক অবস্থা। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষের পক্ষে সেটি সংস্কার করা ব্যয়বহুল তবুও আমরা চেষ্টা করছি। সংস্কার বরাদ্দ হলে ভবনটি সংস্কার করা সম্ভব হবে।

সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূরই আলম সিদ্দিকী বলেন, বিষয়টি জেনেছি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সংস্কারে উদ্যোগ নেওয়ার চেষ্টা করছি।
 
আরকে