হাঁসের খামারে প্রবাসীর সফলতার গল্প শোনালেন নোয়াখালীর ডিসি
মালয়েশিয়া ফেরত এক প্রবাসীর সফলতার গল্প শোনালেন নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক (ডিসি) মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম। বুধবার (২৬ নভেম্বর) জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ গল্প তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, আমি তখন কুড়িগ্রামের ইউএনও। একজন মালয়েশিয়া ফেরত প্রবাসী দেশে ফিরে হাঁসের খামার শুরু করেন। সেই খামারই তাকে কোটিপতি বানিয়েছে। অথচ প্রায় দশ বছর মালয়েশিয়ায় থেকেও তিনি তেমন কিছু করতে পারেননি। আপনাদের মধ্যেও উদ্যোক্তা হওয়ার ইচ্ছা থাকতে হবে। স্বপ্ন থাকতে হবে। তাহলেই সফলতা আসবে। আমাদের দেশ প্রাণিসম্পদে আরও এগিয়ে যাবে।
বিজ্ঞাপন
জেলা প্রশাসক বলেন, সঠিক পরিকল্পনা ও প্রশিক্ষণের অভাবে অনেক খামারি ভালো করতে পারেন না। নোয়াখালীর চরাঞ্চলে দুধের দাম কম। কিন্তু যদি এই দুধ প্রক্রিয়াজাত করে মিষ্টি জাতীয় খাবার তৈরি করা যায়, তাহলে এর বাজারমূল্য অনেক বেড়ে যাবে। প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়ন এবং সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আবদুল্লাহ-আল-ফারুক বলেন, বাংলাদেশের সার্বিক আর্থ–সামাজিক উন্নয়নে প্রাণিসম্পদ খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ উদযাপনের মাধ্যমে আধুনিক প্রযুক্তির বিস্তার, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন, নারী ও যুব উদ্যোক্তা সৃষ্টি, আন্তর্জাতিক মান অর্জন এবং সরকারি–বেসরকারি সমন্বয় আরও জোরদার হবে। আমি এর সার্বিক সফলতা কামনা করি।
বিজ্ঞাপন
জানা গেছে, আধুনিক প্রযুক্তির প্রসার, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন এবং নারী ও যুব উদ্যোক্তা সৃষ্টিকে লক্ষ্য ধরে নোয়াখালীতে বর্ণিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ ২০২৫ শুরু হয়েছে। বুধবার (২৬ নভেম্বর) সকালে ‘দেশীয় জাত, আধুনিক প্রযুক্তি: প্রাণিসম্পদে হবে উন্নতি’ স্লোগানকে সামনে রেখে র্যালি, আলোচনা সভা ও প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
সোনাপুর পৌর শিশু নার্সিং বিদ্যালয়ের সামনে থেকে র্যালিটি শুরু হয়ে একই স্থানে এসে আলোচনা সভায় মিলিত হয়। পরে রঙিন বেলুন উড়িয়ে জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহের উদ্বোধন করেন অতিথিরা। এরপর অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। সভা শেষে অতিথিরা সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে স্থাপিত ৩১টি প্রদর্শনী স্টল পরিদর্শন করেন। পরে সফল উদ্যোক্তা ও খামারিদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। জেলা প্রশাসন ও প্রাণিসম্পদ দপ্তর যৌথভাবে এসব কর্মসূচির আয়োজন করে।
সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. তাসলীমা ফেরদৌসী জানান, সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে— প্রাণিসম্পদ বিষয়ক ভ্রাম্যমাণ আদালতের প্রচারণা, কৃত্রিম প্রজনন সেবা ও ফ্রি ভেটেরিনারি মেডিকেল ক্যাম্প, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানভিত্তিক স্কুল ফিডিং ও সচেতনতামূলক সভা, চিত্রাঙ্কন ও কুইজ প্রতিযোগিতা এবং সমাপনী দিনে ‘প্রাণিসম্পদের টেকসই উন্নয়নে তরুণ, নারী উদ্যোক্তা ও অংশীজনদের ভাবনা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হোমায়রা ইসলাম বলেন, জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ আধুনিক প্রযুক্তি, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও নতুন উদ্যোক্তা তৈরির গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ। নোয়াখালীতে দেশীয় জাত সংরক্ষণ ও খামারিদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে আমরা কাজ করছি। প্রাণিসম্পদ খাত এগোলে গ্রামীণ অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে।
হাসিব আল আমিন/আরএআর