জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম বলেছেন, জুলাই জাতীয় সনদে জনগণের মতামতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে। তাই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজন এখন সময়ের দাবি। গণভোট ছাড়া নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তা জনগণের প্রকৃত ম্যান্ডেট তুলে ধরতে পারবে না।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ্ মাঠে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। আগামী ৩ ডিসেম্বর বুধবার গণভোট আয়োজনসহ পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলনরত আট দলের রংপুরে বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

জামায়াত নেতা মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের অতীত দুঃশাসন, ভোটাধিকার হরণ, বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা এবং ব্যাপক দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান না হলে দেশে স্থায়ী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করাও অত্যন্ত জরুরি।

তিনি বলেন, স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের অবৈধ কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করাও এখন সময়ের দাবি। দেশের রাজনীতিকে কলুষমুক্ত করতে হলে তাদের অপতৎপরতা বন্ধ করা প্রয়োজন। জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণই বাংলাদেশকে একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করতে পারে।

আব্দুল হালিম বলেন, আগামী ৩ ডিসেম্বর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠের বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ৮ দলের নেতা ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ রেজাউল করীম। সভাপতিত্ব করবেন জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। বক্তব্য দেবেন জামায়াতের নায়েবে আমির এটিএম আজহারুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন্দ, নেজামে ইসলামী পার্টির নায়েবে আমির মুফতি মোখলেছুর রহমান কাসেমী, সাংগঠনিক সচিব হাফেজ মাওলানা আবু তাহের খান, খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, সংগঠক মুফতি মাহমুদুল হাসান, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সালাহউদ্দিন, জাগপার সহ-সভাপতি ও মুখপাত্র ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলামসহ ৮ দলের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

এ সময় তিনি আট দলের ঘোষিত বিভাগীয় সমাবেশ সফল করতে রংপুরবাসী এবং গণমাধ্যমকর্মীদের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করেন।

আট দলের পাঁচ দফা দাবিগুলো হলো- জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজন, জাতীয় সংসদের উভয় কক্ষে পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতি চালু, সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি, জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, রংপুর মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমির এ টি এম আজম খান, সেক্রেটারি কে এম আনোয়ারুল হক কাজল, জেলা আমির গোলাম রব্বানী, সেক্রেটারি মাওলানা এমদাদুল হক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের রংপুর মহানগর সভাপতি মো. আব্দুর রহমান কাসেমী, সেক্রেটারি মো. আমিরুজ্জামান পিয়াল, জেলা সভাপতি এ টি এম গোলাম মোস্তফা, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস রংপুর মহানগর সভাপতি মাওলানা ইব্রাহীম খলিল সাঈদ; জেলা সভাপতি মাওলানা নূর আলম সিদ্দিক, খেলাফত মজলিস রংপুর মহানগর সভাপতি ও বিভাগীয় সহকারী পরিচালক মো. তৌহিদুর রহমান রাজু, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা সাহিদুর রহমান রাজা, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) রংপুর জেলা সভাপতি মাসুম বিল্লাহ, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি রংপুর মহানগর সভাপতি আব্দুস সাত্তার শাহ, জেলা সেক্রেটারি মো. হারুন অর রশিদ ফুলবাবু, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) রংপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবু বকর সিদ্দিকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এআরবি