কিশোরগঞ্জের ভৈরবে গ্যাস সিলিন্ডারের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে ১০ শিশুসহ ১৫ জন দগ্ধ হয়েছেন। এর মধ্যে ১২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুর ১টার দিকে জেলার ভৈরব উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের লুন্দিয়া চরপাড়া বাজারে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

হাসপাতাল ও আহতদের স্বজন সূত্রে জানা যায়, গ্যাস সিলিন্ডারের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে দগ্ধদের উদ্ধার করে প্রথমে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ১২ জনকে রাজধানী ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট পাঠান। বাকি তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দোকান মালিক লুন্দিয়া টুকচানপুর গ্রামের বাসিন্দা জহির মিয়া সিংগারা-পুরি ও রুটি ভাজি বিক্রি শেষে সকাল ১০টার দিকে প্রতিদিনের মতো দোকান বন্ধ করে বাড়ি যান। বাড়িতে যাওয়ার সময় তিনি ভুলে গ্যাস সিলিন্ডারের রেগুলেটরের সুইচ বন্ধ করতে ভুলে যান। যার ফলে দীর্ঘ সময় ধরে দোকানের ভেতর গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে দোকানে আগুন ধরে যায়। এ সময় দোকানের সামনে থাকা পথচারী এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দগ্ধ হন।

আহতরা হলেন- উজ্জ্বল মিয়ার ছেলে নিরব (১৫), জিয়া রহমানের ছেলে রাহাত (১২), মনসুর মিয়ার ছেলে ফাহিম (১০), রতন মিয়ার ছেলে আমিন (১০), জয়ধর মিয়ার ছেলে হারুন মিয়া (৪০), বাতেন মিয়ার ছেলে সোহাগ মিয়া (১০), আঙ্গুর মিয়ার ছেলে ওয়াসিবুল (১০), তৌহিদ মিয়ার ছেলে সামিউল (৯), মৃত জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে আল আমিন (৮), এরশাদ মিয়ার ছেলে শুভ (৮), জব্বার মিয়ার ছেলে হেকিম মিয়া (৫৫), আসাদুল্লাহর ছেলে সেরাজুল (১০), খালেক মিয়ার ছেলে ছিদ্দিক মিয়া (৫৮), আ. মালেকের ছেলে মোর্শিদ মিয়া (৫০) ও মৃত মোমতাজ মেম্বারের ছেলে নাছির মিয়া (৪০)।

চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে স্বজনেরা জানান, আহতদের মধ্যে হারুন মিয়ার শরীরের প্রায় ৮০ শতাংশ দগ্ধ হওয়ায় তার অবস্থা সংকটজনক।

প্রত্যক্ষদর্শী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, হঠাৎ রাস্তার ওপর আগুন ছড়িয়ে পড়ে। চোখের সামনে কয়েকজন মানুষকে আগুনে পুড়তে দেখি। পরে জানতে পারি গ্যাস সিলিন্ডার থেকে আগুনের সূত্রপাত।

ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কিশোর কুমার ধর বলেন, ১৫ জন অগ্নিদগ্ধ রোগী হাসপাতালে আসে। একজনের ৮০ শতাংশ এবং অন্যদের ২০–৩০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। ১২ জনকে ঢাকায় বার্ন ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে।

ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কেএম মামুনুর রশীদ বলেন, আহতদের বাড়িতে গিয়ে খোঁজ-খবর নিয়েছি। সরকারের পক্ষ থেকে চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হবে।

মোহাম্মদ এনামুল হক হৃদয়/এমজে