১০ মণ ওজনের শাপলা পাতা মাছ ১ লাখ ৩১ হাজারে বিক্রি
নোয়াখালীর হাতিয়ায় জেলের জালে ধরা পড়েছে ১০ মণ ওজনের এক শাপলা পাতা মাছ। বিরল এই মাছটি ঘিরে স্থানীয় জেলে ও ক্রেতাদের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে বুড়িরচর ইউনিয়নের দানারদোল মাছ বাজারে নিলামে তোলা হয়। ধরা ও বিক্রি নিষিদ্ধ হলেও মাছটি ১ লাখ ৩১ হাজার টাকায় বিক্রি হয়।
বিজ্ঞাপন
জানা গেছে, বুধবার দিবাগত রাতে হাতিয়ার মেঘনার মোহনায় সাগরে গ্যাসকূপের কাছে ধরা পড়ে এই বিরল ও বিশাল আকারের শাপলা পাতা মাছটি। সাত দিন আগে বেহুন্দি নৌকা নিয়ে জাল ফেলতে সাগরে গিয়েছিলেন কামাল মাঝি ওরফে মালয়েশিয়া মাঝি। নিয়মিত মাছ ধরার মতোই দীর্ঘ রাত পার করে ভোরে যখন তারা জাল টানতে যান, তখনই অস্বাভাবিক ভার অনুভব করেন। প্রথমে তারা ধারণা করেন জালে হয়তো একসঙ্গে অনেক মাছ আটকা পড়েছে, কিন্তু ধীরে ধীরে বোঝা যায়, এটি কোনো সাধারণ মাছ নয়—এর ওজন এত বেশি যে বোটে থাকা ১৫ জন মাঝি-মাল্লা মিলে জাল তুলতে সক্ষম হচ্ছিলেন না।
পরিস্থিতি সামাল দিতে পাশের একটি নৌকার জেলেদের সাহায্য নিতে হয়। দুই নৌকার মাঝিদের যৌথ প্রচেষ্টায় শেষ পর্যন্ত উত্তোলন করা হয় ১০ মণ ওজনের বিশাল শাপলা পাতা মাছটি। পরে তা নিয়ে যাওয়া হয় হাতিয়ার দানারদোল মাছঘাটে। সেখানে নিলামে তোলা হলে স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী খবির উদ্দিন ব্যাপারী ১ লাখ ৩১ হাজার টাকায় মাছটি ক্রয় করেন।
বিজ্ঞাপন
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে কামাল মাঝি ওরফে মালয়েশিয়া মাঝি আবেগাপ্লুত হয়ে ঢাকা পোস্টকে বলেন, অনেক দিন ধরে ধারদেনা করে ব্যবসা টিকিয়ে রেখেছি। এত বড় মাছ পাওয়ায় আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া। মাঝি-মাল্লাদের প্রত্যেকে ৫ হাজার টাকা করে পেয়েছেন। তবে ভালো দামের ব্যবসায়ী না থাকায় প্রত্যাশার তুলনায় দাম কম পেয়েছি।
ক্রেতা খবির উদ্দিন ব্যাপারী বলেন, বিরল এই সামুদ্রিক প্রাণীটি ধরা পড়া ও বিক্রিকে কেন্দ্র করে স্থানীয়ভাবে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। মোকামে শাপলা মাছের ভালো চাহিদা। তাই বেশি দামে বিক্রির আশায় মাছটি কিনেছি। সব মিলিয়ে হয়তো ২০ হাজার টাকা লাভ হতে পারে।
এদিকে ঘটনাটি জানার পর হাতিয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. ফয়জুর রহমান আইনগত বিষয়টি স্পষ্ট করে ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী শাপলা পাতা মাছ ধরা ও বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কারণ এটি বিপন্ন প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত এবং সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এদের উপস্থিতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
হাসিব আল আমিন/এএমকে