অবৈধভাবে ইতালি যাওয়ার পথে লিবিয়ার ভূমধ্যসাগরে ট্রলারডুবিতে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার এক কলেজ শিক্ষার্থী নিখোঁজ হওয়ার খবর গণমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর নড়েচড়ে বসেছে উল্লাপাড়া মডেল থানা পুলিশ।

নিখোঁজ যুবক রাকিবুল হোসেন স্বাধীনের (২৩) পরিবারের আর্তনাদ ও সন্তান বেঁচে আছে নাকি মারা গেছে এমন খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়। এ ঘটনায় তিনজন দালালকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাতভর অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- উপজেলার পূর্ণিমাগাতি ইউনিয়নের ঘিয়ালা গ্রামের আবুল কালাম আজাদ, তার মেয়ের জামাই মধ্যবড়হর গ্রামের মোন্নাফ প্রামানিক ও মোন্নাফের স্ত্রী সোনিয়া খাতুন।

নিখোঁজ রাকিবুল হোসেন স্বাধীন (২৩) উল্লাপাড়া উপজেলার বড়হর ইউনিয়নের ইসলামপুর ভুতগাছা গ্রামের গোলাম কিবরিয়া ফিরোজের ছেলে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও উল্লাপাড়া থানা পুলিশের  সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সুমন মাহমুদ বলেন, প্রথমে আবুল কালামকে আটক করা হয়৷ এরপর রাকিবের বাবার করা মামলার প্রেক্ষিতে আবুল কালামের মেয়ে ও মেয়ের জামাইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, দালাল আবুল কালাম আজাদ কলেজ শিক্ষার্থী রাকিবুল হোসেন স্বাধীনকে ইতালি পাঠানোর জন্য তার পরিবারের কাছ থেকে প্রথমে ২৫ লাখ টাকা গ্রহণ করেন। এরপর চলতি বছরের ২২ মে স্বাধীন বাংলাদেশ থেকে রওনা হন। তাকে প্রথমে ভারতের চেন্নাই, এরপর পর্যায়ক্রমে দুবাই, শ্রীলঙ্কা, মিশর ও সর্বশেষ লিবিয়ায় নেওয়া হয়। পরে দালাল তার পরিবারের কাছে জানান যে, স্বাধীন আটক হয়েছে এবং কারাগারে আছে। এরপর দুই দফা আরও ১০ লাখ টাকা নেন।

এরপর ১২ নভেম্বর দালালরা ১২২ জনকে একটি ট্রলারে করে লিবিয়ার উপকূল থেকে ভূমধ্যসাগরের পথে ইতালিতে পাঠানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু কিছু দূর যাওয়ার পর ট্রলারটি আংশিক ডুবে যায়। তখন ট্রলারে থাকা রাকিবুলসহ ৯৭ জনকে মারধরের পর সাগরে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি জানতে পেরে স্বজনরা শনিবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে দালাল কালামকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। এরপর ওই রাতেই রাকিবুলের বাবা থানায় মামলা করেন।

নাজমুল হাসান/আরকে