বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেছেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতির পক্ষে বিএনপির সুদৃঢ় অবস্থান রয়েছে। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে ফ্যসিবাদ এবং উগ্রবাদের স্থান আর হবে না। 

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের বড়দিন উপলক্ষ্যে প্রাক- প্রীতি সম্মিলনী ও শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ময়মনসিংহ-১ (হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া) আসনের ধানের শীষের প্রার্থী এবং বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।

এ সময় খ্রিষ্টানসহ গারো সম্প্রদায়ের জনগণকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানিয়ে সেলিমা রহমান বলেন, আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় এলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সমতলের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর কল্যাণে পৃথক সরকারি কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে। খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের খ্রিষ্টীয় ধর্মীয় মূল্যবোধ রক্ষা এবং ধর্মীয় আচার ও অনুশীলন স্বাধীনভাবে পালনের সাংবিধানিক অধিকার বিএনপি সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে নিশ্চিত করবে। শুধু রাজনীতি নয়, এটি বিএনপির মানবিক রাষ্ট্র নির্মাণের প্রত্যয়। 

সেলিমা রহমান বলেন, বিএনপির রাজনীতি কেবল ক্ষমতা অর্জনের জন্য নয়, এটি মানুষের নিরাপত্তা, মর্যাদা ও বিশ্বাসের জায়গা রক্ষার রাজনীতি। যে বাংলাদেশে কেউ সংখ্যালঘু নয়, যেখানে রাষ্ট্র সবার। সেই বাংলাদেশ গড়াই আমাদের রাজনৈতিক সংগ্রামের লক্ষ্য।

অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, আমি এই এলাকার এমপি হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ পেলে বাংলাদেশের সকল ধর্ম ও জাতিগোষ্ঠীর উৎসবকে সম্মিলিত জাতীয় উৎসবে পরিণত করবো। পাশাপাশি হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়া উপজেলায় ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য প্রদর্শনী ও গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন, তাদের বসবাসরত এলাকায় আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণ, খেলার মাঠ, গির্জা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংস্কার ও উন্নয়ন, রাস্তা ও সেতু নির্মাণ ও সংস্কার, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের বিকাশে সহজ শর্তে ক্ষুদ্রঋণ, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী কালচারাল একাডেমিকে পূর্ণাঙ্গ একাডেমিতে উন্নীতকরণসহ নিয়মিত সাংস্কৃতিক চর্চা ও উৎসব আয়োজনে উদ্যোগ নেওয়া হবে।

এ সময় খ্রিষ্টান নেতৃবৃন্দ প্রাক বড়দিনের অনুষ্ঠান অয়োজন করার জন্য বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব এমরান সালেহ প্রিন্সকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছরে আমরা কখনো প্রাক বড়দিন উদযাপন দেখি নাই। এই প্রথম হালুয়াঘাটে প্রাক বড়দিন উপলক্ষ্যে জাকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের অয়োজন হলো। এজন্য হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়ার গারো সমাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে।

অনুষ্ঠানে ইঞ্জিনিয়ার প্রলয় স্নালের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সুশীল ঘাগ্রা, হালুয়াঘাট ট্রাইবাল অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যন সুভ্রত রেমা, জেবিসির প্রেসিডেন্ট সুবন্ত রখো, চার্জ অব বাংলাদেশের শ্যামল রিছিম, অপুর্ব ম্রং প্রমুখ। 

এদিকে অনুষ্ঠানের শুরুতে সেলিমা রহমান এবং সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স খ্রিষ্টান ও গারো সম্প্রদায়ের নারী, পুরুষ, শিশুদের সাথে নিয়ে বড়দিনের কেক কেটে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। পরে বর্ণাঢ‍্য এই অনুষ্ঠানের ফাঁকে ফাঁকে সংগীত ও নৃত্য পরিবেশিত হয়। 

আমান উল্লাহ আকন্দ/আরএআর