দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার এই ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে নোয়াখালী জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। ইতোমধ্যে নোয়াখালী থেকে প্রায় ৩০০টি বাস ও ২০০টি মাইক্রোবাসে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ঢাকায় নেওয়ার প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নোয়াখালী জেলা বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বে থাকা অ্যাডভোকেট রবিউল হাসান পলাশ।

জানা গেছে, আগামী ২৫ ডিসেম্বর তারেক রহমানের আগমন উপলক্ষে জেলার শীর্ষস্থানীয় নেতারা কয়েক দিন ধরে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। নোয়াখালীর ছয়টি সংসদীয় আসনের জন্য ৫০টি করে বাস বরাদ্দ দিয়ে মোট ৩০০টি বাস প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ট্রেনে এবং ব্যক্তিগতভাবেও নেতাকর্মীরা ঢাকায় যাবেন বলে জানা গেছে। পাশাপাশি নেতাকর্মীদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন রাখতে আলাদা আলাদা সমন্বয় টিম গঠন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বানও জানানো হয়েছে।

নোয়াখালী জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আজগর উদ্দিন দুখু ঢাকা পোস্টকে বলেন, তারেক রহমান শুধু একজন নেতা নন, তিনি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের প্রতীক। তার আগমন উপলক্ষে নোয়াখালীর নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। আমরা শান্তিপূর্ণ ও শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে ঢাকায় যাব।

জেলা বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বে থাকা অ্যাডভোকেট রবিউল হাসান পলাশ ঢাকা পোস্টকে বলেন, তারেক রহমানের আগমন উপলক্ষে নোয়াখালী জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতারা গত কয়েক দিন ধরে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। জেলার ছয়টি সংসদীয় আসনের জন্য আলাদাভাবে পরিবহন ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিটি আসন থেকে ৫০টি করে বাস বরাদ্দ দিয়ে মোট ৩০০টি বাস প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

বেগমগঞ্জ পৌরসভা বিএনপির সভাপতি জহির উদ্দিন তুহিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, তারেক রহমানের দেশে ফেরা দেশের রাজনীতিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। আমাদের নেতা বরকত উল্যাহ বুলুর নেতৃত্বে বেগমগঞ্জ উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপির পক্ষ থেকে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী ২৪ ডিসেম্বর ঢাকায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন।

নোয়াখালী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব হারুনুর রশিদ আজাদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, এটি শুধু একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, এটি গণতন্ত্রকামী মানুষের আবেগের বহিঃপ্রকাশ। নেতাকর্মীদের নিরাপত্তা, যাতায়াত ও সার্বিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে আমরা সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছি। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী সবকিছু সম্পন্ন করা হচ্ছে। নোয়াখালী জেলা বিএনপি ঐক্যবদ্ধভাবে এই কর্মসূচিতে অংশ নেবে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও নোয়াখালী-৪ (সদর-সুবর্ণচর) আসনের ধানের শীষের প্রার্থী মো. শাহজাহান ঢাকা পোস্টকে বলেন, তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে দেশের রাজনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তনের সূচনা হবে। নোয়াখালীর মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই কর্মসূচিতে অংশ নেবে।

দলীয়ভাবে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তবে অনেকেই আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতির অপেক্ষা না করে ইতোমধ্যে নিজ উদ্যোগে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। মানুষের অন্তর থেকে ভালোবাসা ও আবেগের জায়গা থেকে হাজার হাজার মানুষ প্রিয় নেতা, গণতন্ত্রের পথিকৃৎ শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সন্তান তারেক রহমানকে একনজর দেখতে এবং তার বক্তব্য শোনার জন্য সমবেত হতে শুরু করেছেন।

তিনি আরও বলেন, দেখা যাচ্ছে দলীয় প্রস্তুতির চেয়েও সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত প্রস্তুতি অনেক বেশি। কোনো নেতার প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে এমন স্বতঃস্ফূর্ত প্রস্তুতি বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে একটি স্মরণীয় অধ্যায় হয়ে থাকবে বলেই আমি মনে করি। ঢাকায় অবস্থানরত নেতাকর্মী ও সমর্থকেরা তো থাকবেনই, পাশাপাশি নোয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিপুলসংখ্যক মানুষ ঢাকায় যোগ দেবেন। সব মিলিয়ে রাজধানীতে মানুষের ঢল নামবে। এ সময় একটি বিষয় বিশেষভাবে ভাবনার এত মানুষের আগমনে খাবার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের চাহিদা বাড়বে। আমরা আশা করি, খাবার ও অন্যান্য পণ্যের ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা বিষয়টি বিবেচনায় রেখে দাম সহনীয় রাখবেন।

হাসিব আল আমিন/এআরবি