টানা তিন দিনের সরকারি ছুটির দ্বিতীয় দিনে পর্যটকদের ব্যাপক উপস্থিতিতে মুখর হয়ে উঠেছে পটুয়াখালীর জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ভ্রমণপিপাসু মানুষের ঢল নামে কুয়াকাটা সৈকত এলাকায়। ইতোমধ্যে বুকিং রয়েছে ৯০ শতাংশ হোটেলের আবাসিক কক্ষ। পর্যটকদের আগমন উপলক্ষে বাড়তি নিরাপত্তা, মনিটরিং টিম, সেবার মান বৃদ্ধি, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। 

শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) কুয়াকাটা সৈকতের বালিয়াড়িতে পর্যটকদের আনন্দ-উল্লাসে মেতে থাকতে দেখা গেছে। কেউ সমুদ্রের ঢেউয়ে সাঁতার কেটে সময় কাটাচ্ছেন, কেউ বা ব্রেঞ্চে বসে উপভোগ করছেন সূর্য ও সমুদ্রের অপরূপ দৃশ্য। আবার অনেকেই ঘোড়ার গাড়ি ও বিভিন্ন যানবাহনে চড়ে সৈকত এলাকা ঘুরে দেখছেন এবং নানা বিনোদনমূলক কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন।

পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, আগের কয়েক দিনের তুলনায় বর্তমানে তাদের ব্যবসা প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। সংশ্লিষ্টদের ধারণা- ছুটির শেষ দিন পর্যন্ত পর্যটকদের আগমন অব্যাহত থাকবে। স্বাভাবিকভাবে কুয়াকাটা থাকা আবাসিক হোটেল গুলোতে প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার পর্যন্ত ধারণ ক্ষমতা থাকলেও এইবার সেই পরিমাণ লাখের বেশি পৌঁছাতে পারে বলে আশা পর্যটক ব্যবসায়ীদের। তাই বাড়তি প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন সব শ্রেণির ব্যবসায়ীরা। 

ঢাকা থেকে আগত পর্যটক জসিম উদ্দিন বলেন, আমরা পাঁচ বন্ধু ঢাকা থেকে কুয়াকাটায় এসেছি। সমুদ্র সৈকতে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয়ের মনোরম দৃশ্য দেখে সত্যিই মুগ্ধ হয়েছি। সুযোগ পেলে প্রতি বছরই কুয়াকাটায় ঘুরতে আসব। কুয়াকাটার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আমাদেরকে মুগ্ধ করেছে।  

হোটেল সিকদার রিসোর্টের পরিচালক আল-আমিন খান বলেন, গত ১৬ ডিসেম্বর থেকে আমাদের রিসোর্টে ভালো বুকিং রয়েছে। আগামী ২৭ ডিসেম্বরের মধ্যে কোনো রুম খালি নেই। আশা করছি সামনের দিকে আরও ভালো পর্যটক পাব আমরা। যদিও ২০২৬ সালের জাতীয় নির্বাচনের জন্য কিছুটা ভোগান্তি পেতে হতে পারে।  

ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটার (টোয়াক) সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার জানান, কুয়াকাটায় সর্বমোট ২০০টির বেশি আবাসিক হোটেল-মোটেল রয়েছে। তার মধ্যে আগামী ২৫-২৭ তারিখের জন্য বেশিরভাগ হোটেল অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। পর্যটকের চাপ বৃদ্ধির কারণে অনেক পর্যটক রাতে গন্তব্যে ফিরে যান।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা রিজিয়নের সহকারী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বলেন, কুয়াকাটায় উৎসব, আয়োজন ও পর্যটকদের সমাগমে ট্যুরিস্ট পুলিশ সর্বদা প্রস্তুত। কুয়াকাটার সকল দর্শনীয় স্থানগুলোতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিয়োজিত রয়েছেন। পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় আমরা কাজ করছি।

এসএম আলমাস/আরএআর