মাদারীপুরে দুই ইউপি সদস্যের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণ
মাদারীপুরে পূর্ব শত্রুতার জের ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই ইউপি সদস্যের সমর্থকদের মধ্যে ৪ ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে পুলিশের সামনেই ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এ সময় বাড়িঘর ও দোকানপাট ভাঙচুর-লুটপাট করা হয়। এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ওপর সদর উপজেলার মোস্তফাপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ সংঘর্ষ চলে। এ ঘটনায় প্রায় ২ ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। আহতদের মধ্যে একজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
বিজ্ঞাপন
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবত আধিপত্য বিস্তার ও ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মোস্তফাপুর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য হাবিব হাওলাদার গ্রুপের সঙ্গে সাবেক ইউপি সদস্য খোরশেদ সরদারের ছেলে সামচু সরদার ওরফে কোপা সামচু গ্রুপের দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এরই মাঝে একাধিক মামলার আসামি সামচুকে তার বাড়ি থেকে দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে ৪ চার মাস কারাবাস শেষে জামিনে মুক্তি পেয়ে আধিপত্য বিস্তারে তিনি মরিয়া হয়ে ওঠেন। মঙ্গলবার দুপুরে হঠাৎ করে মোস্তফাপুর গ্রামের ফজলে আলী হাওলাদারের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় সামচু গ্রুপের লোকজন। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে উভয় পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
এ সময় অর্ধশত ককটেল বিস্ফোরনের ঘটনা ঘটে। মোস্তফাপুরসহ আশপাশের এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ভাঙচুর করা হয় আরও বেশ কয়েকটি দোকানপাট ও ঘরবাড়ি। খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও র্যাব-৮ সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর তেড়ে আসে সংঘর্ষকারীরা। এ সময় পুলিশ মাইকিং করলে তাদের লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ করা হয়। এতে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে সন্ধ্যা ৬টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এ সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ইউপি সদস্য হাবিব গ্রুপের হানিফ সরদারকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং জুবায়ের হাওলাদারকে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে কর্মরত পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রাজ্জাক ঢাকা পোস্টকে জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় আহত দুইজনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। একজনকে রেফার্ড করা হয়েছে এবং আরেকজনকে এখানেই ভর্তি করেছে কর্তব্যরত চিকিৎসক।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ফারিহা রফিক ভাবনা জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে মাইকিং করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালানো হয়। তখন তারা কোনো কথা মানেনি। একপর্যায়ে থানা পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আকাশ আহম্মেদ সোহেল/আরএআর