কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে বেড়েই চলেছে করোনা সংক্রমণ। আগে শহরে সংক্রমণের হার বেশি থাকলেও বর্তমানে গ্রামেও ছড়িয়ে পড়ছে। উপজেলার ফার্মেসিগুলোতে মিলছে না প্রয়োজনীয় ঠান্ডা-জ্বরের ওষুধ। এতে জনমনে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। 

এদিকে সামাজিক বিড়ম্বনার ভয়ে উপসর্গ থাকার পরও অনেকে করোনা পরীক্ষা করাচ্ছেন না। গ্রামের মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও মাস্ক ব্যবহারেও উদাসীনতা দেখা যাচ্ছে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এ প্রবণতাকে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার পাশাপাশি জনসাধারণকে সচেতন করতে ব্যাপক উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

তবে ফার্মেসিগুলোতে সংকট সৃষ্টি হয়েছে বেক্সিমকো গ্রুপের নাপা (প্যারাসিটামল) ও অ্যাজিথ্রোমাইসিন ওষুধের। দাম বাড়ানো হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এক সপ্তাহ ধরে প্যারাসিটামল ও অ্যাজিথ্রোমাইসিন ওষুধের বিক্রি বেড়েছে। ওষুধ না পেয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

সোমবার (২৮ জুন) সন্ধ্যার পর উপজেলা এক ফার্মেসিতে ওষুধ কিনতে আসেন নন্দলালপুর গ্রামের সানোয়ার হোসেন। তিনি জানান, এক পাতা নাপা (প্যারাসিটামল) ওষুধ কিনতে এসেছেন। অনেকগুলো ফার্মেসি ঘোরাঘুরি করে পাননি।

উপজেলার মাঠপাড়ার বাসিন্দা মাসুদ জানান, গত শুক্রবার তিনি বাজারের বিভিন্ন ফার্মেসি ঘুরেও এক পাতা নাপা কিনতে পারেননি। পরে বাধ্য হয়ে স্কয়ারের এইচ কেনেন।

বাজারের হাজী ফার্মেসির স্বত্বাধিকারী খন্দকার আলহাজ্ব রেজাউল করিম ভাসানী বলেন, এক সপ্তাহ ধরে বেক্সিমকো গ্রুপের নাপার সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।

উপজেলা ড্রাগিস্ট সমিতির সাধারণ সম্পাদক মানিক মোহাম্মদ হিরো বিশ্বাস বলেন, বেক্সিমকো কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিরা ওষুধ না দেওয়ার কারণে নাপা (প্যারাসিটামল) ফার্মেসিতে নেই। তবে অন্য কোম্পানির ওষুধ রয়েছে। কোনো ফার্মেসিতে কেউ ওষুধ মজুদ করছে না বলেও তিনি দাবি করেন।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেক্সিমকো কোম্পানির এক বিক্রয় প্রতিনিধি বলেন, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় মার্কেটে নাপার (প্যারাসিটামল) সংকট রয়েছে। তবে কয়েকদিনের মধ্যে সরবরাহ স্বাভাবিক হবে বলে আশা করেন তিনি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ড. আকুল উদ্দিন বলেন, বেক্সিমকো কোম্পানির নাপা জাতীয় ওষুধ ফার্মেসিতে পাওয়া যাচ্ছে না বলে শুনেছি। তবে এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে বারবার উপদেশ দেওয়ার পরও জ্বর-সর্দিতে আক্রান্ত লোকজন করোনা পরীক্ষায় আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। তারা পরীক্ষা না করে বিভিন্ন ফার্মেসিতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ফলে করোনার সংক্রমণ বিভিন্ন উপজেলায় ছড়িয়ে যাচ্ছে।

কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজীবুল ইসলাম খান বলেন, করোনা মহামারিতে কোনো ফার্মেসি ওষুধের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেতে পারবেন না। এ জন্য বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। ওষুধের অতিরিক্ত দাম নেওয়ার অভিযোগ পেলে ওই ফার্মেসি মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাজু আহমেদ/এসপি