‘ভাড়া আগের মতোই। বাড়তি কেউ দেয় না, আমরাও চাইনা। লকডাউনের আগে যা পেতাম এখনও তাই। মাঝে মধ্যে একটু বেশি আয় হয়। মহাসড়কে তেমন গাড়ি নেই। যাত্রীও বেশি নেই। তবে ফাঁকা রাস্তায় রিকশা চালিয়ে অনেকটা স্বস্তি। তার চেয়ে ভালো লাগে, পুলিশের ঝামেলা নেই। আগে ধরলে র‌্যাকার বিল বাবদ এক থেকে ২ হাজার টাকা লাগতো। কখনো কখনো রিকশাটাই আর ফিরত পেতাম না।’ বলছিলেন আশুলিয়ার রিকশাচালক রহিম মিয়া।

গাইবান্ধায় জেলায় রহিম মিয়ার স্থায়ী নিবাস। তবে জীবিকার তাগিদে ৭ বছর ধরে পরিবারসহ এই নগরীতেই বসবাস করে আসছেন। এই লকডাউনে আশুলিয়ার বিভিন্ন মহাসড়কে যাত্রী নিয়ে ছুটে বেড়ান তিনি। ঝড়-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে এখন দুই বেলা রিকশা চালান তিনি। কারণ লকডাউন শেষ হলে আবার রিকশা সহজে চলতে পারবেন না মহাসড়কে।

রহিম মিয়ার মতো সাভারের আশুলিয়ায় মহাসড়কে রিকশা চালকদের ভিড়। রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে একটু বাড়তি ভাড়ায় আশায় যাত্রীর অপেক্ষায় রয়েছেন তারা। সাভারের বাইপাইল, পল্লিবিদ্যুৎ, সাভার বাসস্ট্যান্ডে এখন রিকশাই ভরসা।

কথা হয় আরেক রিকশাচালক তমিজ উদ্দিনের সঙ্গে। ৫ বছর ধরে এই শিল্পনগরীতে রিকশা চালান তিনি। থাকেন আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায়। আগে এলাকার আপেপাশেই শাখা সড়কে যাত্রী বহন করতেন তিনি। এখন যাত্রীর প্রয়োজনে ৮ থেকে ১০ কিলোমিটারও ছুটে চলেন তিনি।

এদিকে গণপরিবহনসহ অপ্রয়োজনীয় যান চলাচল বন্ধ। তাই জরুরি প্রয়োজনে রিকশা এখন সাধারণ মানুষের ভরসা। সাধারণ মানুষ বলছেন, জরুরি প্রয়োজনে রিকশাই ভরসা। নিরাপদও বটে।

রিকশা যাত্রী আলম বলেন, আমি ওষুধ কেনার জন্য বাসা থেকে বের হয়েছি। প্রথমে জামগড়া সেই ওষুধ পাইনি। পরে বাইপাইল দিয়ে পল্লিবিদ্যুৎ থেকে ওষুধ নিয়ে আসলাম। রিকশায় বর্তমানে নিরাপদ যাত্রা। কারণ একাই বসে যাওয়া যায়। এখানে করোনার ঝুঁকি নাই।

তবে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বলছেন, রিকশাচালকদের অবশ্যই মুখে মাস্ক ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। যাতে করে তারা নিরাপদ থাকতে পারেন।

প্রসঙ্গত, মহামারি করোনা মোকাবেলায় ১ জুলাই থেকে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এ কারনে বন্ধ রয়েছে সব ধরনের গণপরিবহন। এই সুযোগে মহাসড়কে রোজগারের আশায় রিকশাচালকরা।

এমএসআর