বাংলাদেশের জাতীয় ফুল শাপলা। দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি সবজি হিসেবেও এর স্বাদ অতুলনীয়। শাপলা কেউ খায় শখ করে, কেউ আবার অভাবে পড়ে। আর এই শাপলা ফুলকেই জীবিকা হিসেবে নিয়েছেন মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার শতাধিক পরিবার। ফুল বিক্রি করেই তাদের দুবেলার দুমুঠো খাবার জুটছে।  

জানা গেছে, বর্ষা মৌসুমে উপজেলার কৃষি জমিগুলো পানির নিচে তলিয়ে যায়। ফলে জমিগুলোতে আর কিছু করা যায় না। এ সময় পানিতে জন্মে শাপলা। শাপলার মৌসুম থাকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত।

শাপলাকে বর্তমানে সবজি হিসেবে খাওয়া হচ্ছে। শুধু গ্রাম নয়, শহরের সবজি হিসেবে জনপ্রিয় শাপলা। আর সেই শাপলা বিক্রি করে এখন জীবিকা নির্বাহ করছেন সিরাজদিখান উপজেলার বিভিন্ন এলাকার শতাধিক পরিবার। এ পেশায় কোনো পুঁজির প্রয়োজন হয় না। তাই বিভিন্ন বয়সের লোক এ পেশায় অংশ নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে।

বর্ষা মৌসুমে সিরাজদিখান উপজেলার ডুবে যাওয়া বিভিন্ন ইরি জমি, আমন ধান ও পাট খেতে শাপলা জন্মায় । এ ছাড়া এলাকার ইছামতি খালের বিলের পানিতেও শাপলা ফুল ফোটে। শাপলা ফুল সাধারণত জ্যৈষ্ঠ মাস থেকে শুরু করে কার্তিক মাস পর্যন্ত পাওয়া যায়। তবে মৌসুমের শেষ অর্থাৎ কার্তিক মাসে তেমন বেশি পাওয়া যায় না। এলাকার শাপলা সংগ্রহকারী কৃষকরা ভোর থেকে নৌকা নিয়ে ডুবে যাওয়া জমিতে ও বিলের মধ্যে ঘুরে ঘুরে শাপলা সংগ্রহ করেন। তারপর সেগুলো বাজারে বিক্রি করেন।

শাপলা সংগ্রহকারী আব্দুল হামিদ জানান, একজন লোক এক দিনে ৩৫/৪০ মোঠা শাপলা জমি থেকে তুলতে পারেন। এক মোঠায় ৬০টি শাপলা থাকে। পাইকাররা শাপলা কিনে যাত্রাবাড়ীতে বিক্রি করেন। 

তিনি আরও জানান, সিরাজদিখান উপজেলার রসুনিয়া, ইমামগঞ্জ ও তালতলায় শাপলা পাইকারি বিক্রি করা হয়। পাইকাররা এখান থেকে শাপলা কিনে নিয়ে যায়।

উপজেলার চরনিমতলী গ্রামের পাইকার মল্লিক বাবু জানান, প্রতিদিন প্রায় দেড় হাজার থেকে দুই হাজার মোঠা শাপলা ক্রয় করি। এক মোঠা শাপলা ২০ টাকা দরে ক্রয় করি। তারপর গাড়ি ভাড়া প্রতি মোঠা গড়ে তিন টাকা, শ্রমিক এক টাকা, আড়ত খরচ দুই টাকাসহ ২৭-২৮ টাকা খরচ পড়ে। যাত্রাবাড়ীতে প্রতি মোঠা শাপলা বিক্রি করি ৩৫-৩৭ টাকা করে।

ব.ম শামীম/এসপি