রোগীদের জন্য ১০০ শয্যাবিশিষ্ট করোনা ইউনিটে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে

সোমবার (৫ জুলাই) দুপুরে করোনা ইউনিটে গিয়ে দেখা যায়, ১০০ শয্যাবিশিষ্ট ইউনিটে ৩৫ জন রোগী ভর্তি আছে। ৭ দিন থেকে করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার মাশায়েক আবদুল্লাহ (৪০)। তিনি জানান, গত পরশু শ্বাসকষ্ট বেড়ে গিয়েছিল অক্সিজেন নিতে হয়েছে। এখানকার চিকিৎসক ও নার্সরা বারবার খোঁজ নিচ্ছেন। হাসপাতাল থেকে ওষুধ দেওয়া হয়েছে। পরিবেশ ও চিকিৎসা ভালো।

চিকিৎসাধীন রোগী ও তাদের স্বজনরা বলছেন, চিকিৎসক ও নার্সদের সেবা আর হাসপাতালের ব্যবস্থাপনায় সন্তুষ্ট তারা।

এদিকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য ১০০ শয্যাবিশিষ্ট করোনা ইউনিটে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। তবে এক সপ্তাহ থেকে অস্বাভাবিকভাবে রোগী বাড়ছে কোভিড-১৯ আইসোলেশন ওয়ার্ডে, যার অধিকাংশ রোগী গ্রামাঞ্চলের। প্রতিদিনেই রোগীরা সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরছে।

করোনায় আক্রান্ত রোগীদের সেবায় চিকিৎসক ও নার্সের সংকটের মধ্যেও সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। চিকিৎসক ও নার্সরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছেন- মো. মেসবাহুল হাসান চৌধুরী, তত্ত্বাবধায়ক

আইশোলশনে আছেন সদর উপজেলার কবরস্থান মোড় এলাকার বাসিন্দা আব্দুল এজাজ (৫৫)। তিনি জানান, এখন অনেকটা সুস্থ আছি। হাসপাতালে নিবিড়ভাবে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। ডাক্তাররা আমাদের সঙ্গে এসে কথা বলেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন।

রোগীদের সঙ্গে কথা বলতে একজন চিকিৎসকসহ সেখানে আসেন নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. অমল রায়। এক এক করে রোগীর গায়ে হাত দিয়ে দেখতে শুরু করলেন তিনি। সমস্যার কথা শুনছেন, ব্যবস্থাপত্র লিখে দিচ্ছেন।

ঢাকা পোস্টকে ডা. অমল রায় বলেন, নীলফামারীতে অস্বাভাবিক হারে করোনা রোগী বাড়ছে, যার অধিকাংশই গ্রামাঞ্চলের। আমাদের অক্সিজেন সংকট নেই। সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম চলু হয়েছে কয়েক দিন আগে। আমরা একসঙ্গে ২০০ রোগীকে অক্সিজেন সেবা দিতে পারব। হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা আছে ১টি। জরুরি ভিত্তিতে এটি আরও দরকার।

তিনি জানান, হাসপাতালে আমরা ৩০ শতাংশ চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসাসেবা চালিয়ে যাচ্ছি। সবাই রোস্টার অনুযায়ী করোনা ইউনিটে দায়িত্ব পালন করছি। বর্তমানে ৩ জন চিকিৎসক, ১১ জন নার্সসহ বেশ কয়েকজন কর্মচারী করোনা ইউনিটে কাজ করছেন।

নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. মেসবাহুল হাসান চৌধুরী জানান, করোনায় আক্রান্ত রোগীদের সেবায় চিকিৎসক ও নার্সের সংকটের মধ্যেও সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। চিকিৎসক ও নার্সরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছেন। কিন্তু করোনা রোগী যে হারে বাড়ছে, ভবিষ্যতে সামাল দেওয়া কষ্টসাধ্য হতে পারে।

উল্লেখ্য, গত ২৪ ঘণ্টায় নীলফামারী জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ৩২ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২০০৯ জন। মোট সুস্থ হয়েছে ১৬৮৩ জন। মৃত্যুবরণ করেছেন ৩৬ জন।

এনএ