বিগ-বসকে দেখতে আসেন আশপাশের মানুষ

কোরবানি উপলক্ষে বিক্রির জন্য ১২শ ৫০ কেজি ওজনের একটি গরু প্রস্তুত করেছেন কৃষক আফিল উদ্দিন। শখ করে গরুটির নাম রেখেছেন “বিগ-বস”। উচ্চতায় ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি ও ১০ ফুট  লম্বা কালো ও হালকা লালচে রঙের এই গরুটির বয়স চার বছর। বিগ-বসের দাম হেঁকেছেন ২০ লাখ টাকা। 

কৃষক আফিল উদ্দিন ঠাকুরগাঁও হরিপুর উপজেলার ডাঙ্গিপাড়া ইউনিয়নের তালতলা গ্রামের বাসিন্দা। নিজের বাসায় লালন পালন করেছেন গরুটি। প্রতিদিন আশপাশের মানুষ তার বাড়িতে ভিড় করছে একঝলক এই বিস বসকে দেখতে।

রোববার (৪ জুলাই) বিগ-বসকে দেখতে কৃষক আফিল উদ্দিনের বাড়িতে যান ঢাকা পোস্ট প্রতিবেদক। আফিল উদ্দিন বলেন, প্রতিদিন প্রায় এক থেকে দেড় হাজার টাকার খাবার লাগে বিস-বসের। করোনার সময় বিগ-বসকে কার হাতে তুলে দেবেন, ন্যায্য মূল্য পাবেন কি না এ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন তিনি। 

২০১৭ সালে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার লাহেরী বাজার থেকে এলসি জাতের ছোট একটি বাছুর ক্রয় করেছিলেন আফিল। তখন থেকে গোয়াল ঘরে একে লালন করে যাচ্ছেন। বিগ-বসের গায়ের রং কালো ও মাথায় হালকা লালচে দাগ রয়েছে। আসন্ন কোরবানির ঈদে শখের বসে বড় করা এই বিগ-বসকে বিক্রি করতে চান কৃষক আফিল। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হরিপুর উপজেলার ডাঙ্গিপাড়া ইউনিয়নের তালতলা গ্রামে আফিল উদ্দিনের বাড়িতে এই বিস-বসকে দেখতে এসেছেন আশপাশের নারী-পুরুষ।  

আফিল উদ্দিনের বিগ-বসকে দেখতে এসেছেন স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল হাই। তিনি বলেন, বাসার পাশে আফিল ভাই একটা গরু দীর্ঘদিন ধরেই লালনপালন করছেন। একজন মানুষ যেভাবে তার সন্তান মানুষ করে যত্নসহকারে ঠিক সেভাবে তিনিও এই গরুকে বড় করেছেন। গরুটি অনেক বড়, এর আগে এতো বড় গরু দেখিনি। এছাড়াও এখানে অনেকই আসছেন গরুটি দেখতে। 

Caption

 

গণি মিয়া নামের আরেকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, আফিল উদ্দিন বর্তমানে এই গরুটি নিয়ে চিন্তিত। ঈদে গরু বিক্রি করে লাভের আশা করেছিলেন। কিন্তু করোনার সময়ে এত বড় গরু বিক্রি করাই এখন চ্যালেঞ্জ। তবে নিজ এলাকায় এত বড় গরু দেখে সবাই খুশি।

কৃষক আফিল উদ্দিন বলেন, চার বছর হয়ে গেল গরুটি আমার বাসায় রয়েছে। এখানে তার দেখাশুনা করা হয়। দানাদার ও লিকুইড খাদ্য হিসেবে খৈল, গম, ভুট্টা, বুট ও ছোলার ভুষি, চিটাগুড়, ভিজানো চাল, খুদের ভাত, খড়, নেপিয়ার ঘাস ও কুড়া মিলে দিনে দুইবার খাওয়া দিতে হয়। তীব্র গরমে গভীর রাতে উঠে ‘বিগ-বসকে’ কখনও দুবার গোসল করানো হয়েছে। গোয়ালঘর থেকে গরুটি বের করা হয় না। খাওয়া, গোসল সবই গোয়ালঘরে করানো হয়। বিক্রির জন্য এই প্রথম গোয়াল থেকে বিগ-বসকে বাইরে আনা হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, বিগ-বসের পেছনে প্রতিদিন প্রায় ২ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ১২ লাখ টাকা খরচ হয়ে গেছে। নিরাপত্তা দিতেও এখন রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাকে। অনেকে ৮-১০ লাখের মতো দাম বলছে। কিন্তু এই দামে বিক্রি করলে লস হবে খুব। 

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, গরুটির বিষয়ে শুনেছি। উপজেলা প্রাণিসম্পদে যারা আছেন তারা এসব কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।  করোনার জন্য কোরবানির হাট বসবে কি না তা নিয়ে গরুর মালিকরা চিন্তিত। তবে আমরা অনলাইনের মাধ্যমে গরু বিক্রির ব্যবস্থা করছি। 

মো. নাহিদ রেজা/এইচকে