লক্ষ্মীপুরে ২৪ ঘণ্টায় বেড়েছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা। নতুন করে ২১৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৬৪ জনের শরীরে পজিটিভ শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ১৭ দশমিক ৫১ শতাংশ। তবে গত কয়েক দিনে কোনো মৃত্যুর ঘটনা নেই। এ পর্যন্ত এ জেলায় ৩৭১০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সূত্র।

এদিকে জেলা শহরসহ উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে নিত্যপণ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের দোকানে চুপিসারে ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতারা। ম্যাজিস্ট্রেটসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পাহারা দিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। ঈদ সামনে রেখে টানা লকডাউনে ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ায় বাধ্য হয়ে দোকান খুলছেন বলে জানিয়েছেন কয়েকজন ব্যবসায়ী।

এ ছাড়া বিকেল হলেই গ্রামের বাজারগুলো জমে উঠে মানুষের উপস্থিতিতে। রাত ১২টা পর্যন্ত জেলা শহরের চকবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় মানুষের জটলা দেখা যায়।

অন্যদিকে টানা তিন দিন ব্যাংক বন্ধের পর সোমবার গ্রাহকদের ভিড় দেখা যায় ইসলামী ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকসহ কয়েকটি ব্যাংকে। যেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গায়ে গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে টাকা জমা ও উত্তোলন করছেন গ্রাহকরা।

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে সদর উপজেলায়, ৪০ জন। এ ছাড়া রামগঞ্জে ১০, রামগতি ৩, রায়পুরে ৭ ও কমলনগরে ৪ জনের শরীরে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে। শুরু থেকে এ পর্যন্ত একসঙ্গে এত মানুষের করোনা আক্রান্ত হয়নি। এর আগের ফলাফলে জেলা ৩৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শুরু থেকে এ জেলায় ৩ হাজার ৭১০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৩ হাজার ১২৯ জন সুস্থ হয়েছেন। হাসপাতাল ও হোম আইসোলেটেডে ৫২৪ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। জেলার ৫টি উপজেলায় করোনায় ৫৭ জন মারা গেছে। এর মধ্যে ২৯ জনের মৃত্যুর পর করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ ছাড়া উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ২১ জন।

জানা গেছে, করোনা রোগীদের সেবায় ১০০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালে ৩টি আইসিইউ বেড, ৫টি হাই ফ্লো নোজাল ক্যানালা রয়েছে। এছাড়া ২০টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটরের মধ্যে সদর হাসপাতালে ৭, রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২, কমলনগরে ২, রায়পুরে ২, রামগতিতে ২ ও সিভিল সার্জনের অফিস স্টোরে ৫টি রয়েছে।

এ জেলায় এস্ট্রোজেনিকা টিকার প্রথম ধাপে প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৫৫ হাজার ৫২৬ জন, দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৩৬ হাজার ৬৩ জন। দ্বিতীয় ধাপে ৭৩৬ জন সাইনোফার্ম টিকা নিয়েছেন। প্রায় ৩৩ হাজার টিকা মজুত রয়েছে।

লক্ষ্মীপুর জেলা সিভিল সার্জন ড. আবদুল গফ্ফার বলেন, এর আগে এতসংখ্যক রোগী আক্রান্ত হয়নি। এটিই এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ আক্রান্তের রেকর্ড। করোনা সংক্রমণ রোধে এখনো জনগণ পুরোপুরি সচেতন নয়। তবে প্রাণঘাতী এ ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে নিজে সচেতন হয়ে অন্যকেও সচেতন করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

হাসান মাহমুদ শাকিল/এনএ