মেয়ে ও নাতির সঙ্গে বাড়ি ফিরছেন সুরবান

নাম-ঠিকানা বলতে না পারা ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধা সুরবানুকে (৭০) তার মেয়ে ও নাতির কাছে হস্তান্তর করেছে স্নিগ্ধা আশ্রম কর্তৃপক্ষ। গত ২৩ জুন বিকেলে আশ্রমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিবিড় আহমেদের উপস্থিতিতে সুরবানুর মেয়ে ও নাতি মো. রাসেল তাকে তাদের বাসায় নিয়ে যান। 
 
এর আগে গত ১৫ জুন ঢাকা পোস্ট ডট কমে ‘পরিচয় বলতে না পারা বৃদ্ধার ঠাঁই হলো স্নিগ্ধায়’ শিরোনামে ভিডিওসহ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। 

সুরবানু এখন তার নাতি রাসেলের বাসায় আছেন। রাসেল রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানার শনির আখড়ায় থাকেন। রাসেলের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার ভূঞাপুর গ্রামে আর তার নানি সুরবানুর বাড়ি চাঁদপুর জেলায়।

সুরবানুর নাতি মো. রাসেল ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত ৮ মে আমার নানি আমাদের বাসা থেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করে আমরা তাকে পাইনি। একদিন ফেসবুকে ঢাকা পোস্ট ডটকমের একটি ভিডিওতে আমার নানিকে দেখতে পাই। সেখান থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী শেরপুর জেলার স্নিগ্ধা আশ্রমে এসে নানিকে ১ মাস ১৩ দিন পর খুঁজে পাই।

তিনি বলেন, পারি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে নানি স্নিগ্ধা আশ্রমে আসেন। এই কয়েক দিন আশ্রমের লোকজন আমার নানিকে ভালোভাবে দেখাশোনা ও যত্ন নিয়েছেন। নানি বয়োবৃদ্ধ হওয়ায় কানেও কম শোনেন। এত দিন পর তাকে পেয়ে আমরা আবেগ আপ্লুত। এ জন্য ঢাকা পোস্ট, পারি ফাউন্ডেশন ও স্নিগ্ধা আশ্রম কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই।

স্নিগ্ধা আশ্রমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিবিড় আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত ২৩ জুন সকালে হঠাৎ কয়েকজন আশ্রমে এসে জানান যে তারা সুরবানুর স্বজন। এরপর তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আমরা নিশ্চিত হয়ে সুরবানুকে তার নাতি ও মেয়ের কাছে হস্তান্তর করেছি।

তিনি বলেন, জানতে পারি সুরবানুর গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর জেলায়। তিনি বর্তমানে তার পরিবারের সঙ্গে রাজধানীর কদমতলী থানার শনির আখড়ায় থাকতেন। হঠাৎ একদিন তিনি নিখোঁজ হন। পরে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পারি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সুরবানু গত ১৪ জুন স্নিগ্ধা আশ্রমে আসেন।

পারি ফাউন্ডেশনের সহসাধারণ সম্পাদক ওয়াসিম খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা অত্যন্ত আনন্দিত যে সুরবানু তার পরিবারকে কাছে পেলেন। আমরা চাই পরিচয়হীন কাউকে যেন কোনো বৃদ্ধাশ্রমে থাকতে না হয়। কারণ শেষ বয়সে সব বয়োবৃদ্ধ মানুষ তার পরিবারের আদর-যত্ন আশা করে।

উল্লেখ্য, ১৩ জুন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পারি ফাউন্ডেশনের সদস্যরা ঢাকার কামরাঙ্গীর চর থানার পাশে সুরবানুকে পান। তখন তিনি নাম-ঠিকানা বলতে পারেননি। ১৪ জুন বিকেলে তারা শেরপুর সদর উপজেলার চরমোচারিয়া ইউনিয়নের নলবাইদ গ্রামে গড়ে ওঠা স্নিগ্ধা আশ্রম কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষের কাছে তাকে হস্তান্তর করেন তারা।

জাহিদ সৌরভ/এনএ