জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের নির্দেশনার বাইরে কেউ চিন্তা করলে তা রংপুর থেকে প্রতিহত করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।

তিনি বলেছেন, দলের অভ্যন্তরীণ সমস্যা দূর করতে হবে। জিএম কাদেরের নির্দেশনার বাইরে কেউ চিন্তা করলে হবে না। যেভাবেই হোক আগামী নির্বাচনে বৃহত্তর রংপুরের ২২ আসন ফিরিয়ে আনবে জাতীয় পার্টি। কেউ দলের চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তের বাইরে চিন্তা করলে তা রংপুর থেকে প্রতিহত করা হবে। তাদেরকে রংপুরে আমরা জায়গা দেব না। সেজন্য নেতাকর্মীরা প্রস্তুত আছে।

বুধবার (১৪ জুলাই) দুপুরে রংপুর নগরীর দর্শনাস্থ পল্লী নিবাসে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে অংশ নিয়ে মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা এসব কথা বলেন। জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয়।

মেয়র মোস্তাফিজার আরও বলেন, আমাদের অভ্যন্তরীণ কিছু কোন্দল আছে, সেগুলো মিটমাট করতে হবে। দলের প্রতিষ্ঠাতা নিজেই তার ছোট ভাই জিএম কাদেরকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দিয়ে গেছেন। তার সিদ্ধান্তের সঙ্গে যারা দ্বিমত পোষণ করবে তাদের আমরা জায়গা দেব না। তাদেরকে প্রতিহত করা হবে। এরশাদের জাতীয় পার্টি একটাই, যার নেতৃত্বে জিএম কাদের রয়েছেন।  

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি, নুরুল ইসলাম তালুকদার এমপি, কেন্দ্রীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট ও রংপুর মহানগর সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসির, সাংগঠনিক সম্পাদক ও রংপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক হাজী আব্দুর রাজ্জাক, জাতীয় ছাত্রসমাজের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আল মামুন প্রমুখ।

ব্যারিস্টার শামীম হায়দার বলেন, আজকে চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে নেই। করোনাসহ বিভিন্ন পরিস্থিতিতে সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্তে মানুষ সঠিক দিক নির্দেশনা পাচ্ছে না। আজকে মানুষ এরশাদের সুশাসনের অভাব অনুভব করছে। তার ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণের আইডিয়া ও সুশাসনের আকাঙ্ক্ষাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়ে তৃণমূল থেকে দলকে শক্তিশালী করা হচ্ছে।

এর আগে সকাল থেকে পল্লী নিবাসে দলটির চেয়ারম্যানের পক্ষে রংপুর মহানগর ও জেলা জাতীয় পার্টি, যুবসংহতি, ছাত্রসমাজ, স্বেচ্ছাসেবক পার্টি, মহিলা পার্টি, শ্রমিক পার্টি, রিকশা ও অটো শ্রমিক পার্টি ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। পরে তারা দলের প্রতিষ্ঠাতার রুহের শান্তি কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করেন। 

বিকেলে এতিম ও অসহায়দের মাঝে উন্নতমানের খাবার বিতরণ করেন দলের নেতাকর্মীরা। রংপুর মহানগর ছাড়াও উপজেলা পর্যায়ে কোরআন খতম, আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে সাবেক এই রাষ্ট্রপ্রধানের মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়।  

এছাড়াও সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মী ছাড়াও বিপুল পরিমাণ সাধারণ মানুষ দিনভর ভিড় জমায় এরশাদের সমাধিস্থলে। আগামী প্রজন্মের মাঝে এরশাদের স্মৃতি তুলে ধরতে এরশাদ স্মৃতি কমপ্লেক্স নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। 

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরএআর