কঠোর বিধিনিষেধের লকডাউন শিথিলের দ্বিতীয় দিনে সাভারের বিভিন্ন বিপণিবিতান ও বিপণিবিতানের সামনে মানুষ আর মানুষ। লকডাউন শিথিল হলেও স্বাস্থ্যবিধি মানার কঠোর নির্দেশনা ছিল সরকারের পক্ষ থেকে। কিন্তু লকডাউন শিথিল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই স্বাস্থ্যবিধি যেন এখন উপহাস মাত্র।

শুক্রবার (১৬ জুলাই) সাপ্তাহিক ছুটির দিন থাকায় সর্বত্রই চোখে পড়েছে প্রচুর মানুষের চাপ। তীব্র গরমে মানুষের ওষ্ঠাগত প্রাণ। তবুও তাতে ভ্রূক্ষেপ নেই মার্কেটের ক্রেতা ও বিক্রেতাদের।

শুক্রবার (১৬ জুলাই) বিকেলে সাভারের বিভিন্ন মার্কেট ও আশুলিয়ার জামগড়া, কবিরপুর, বাইপাইল ও বলিভদ্রবাজার এলাকার বিভিন্ন বিপণিবিতান ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। প্রতিটি মার্কেটে ছিল উপচে পড়া ভিড়। দীর্ঘ সময় মার্কেট বন্ধ থাকার পর খুলে দেওয়ায় ক্রেতার চাপ বেড়েছে বলে দাবি বিক্রেতাদের।

আশুলিয়ার বাড়ইপাড়া এলাকার ইসলামপুর মার্কেটের কাপড় ব্যবসায়ী আলমগীর ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা দীর্ঘদিন পরে মার্কেট খুলতে পেরেছি। এতোদিন ঋণ করে সংসার চালিয়েছি। আজ মার্কেটে অনেক ক্রেতা। ঈদের আগে মার্কেট খুলে দেওয়ায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমরা স্বাস্থবিধি মেনে ব্যবসা করার চেষ্টা করছি।

বলিভদ্রবাজার মন্ডল প্লাজার বিক্রেতা অমিত বলেন, আমরা তো ব্যবসা করতে পারি প্রায় দেড় বছর ধরে। সরকারের সদয় হওয়ায় এবার ঈদে মার্কেট খুলে দিয়েছেন। ক্রেতারও সারা পাচ্ছি অফুরন্ত। অনেক ক্রেতা সমাগম হচ্ছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মানার সব ধরনের ব্যবস্থা থাকলেও ক্রেতারা একটু উদাসিন।

সব মার্কেটেই ক্রেতার উপচে পড়া ভিড়। স্বাস্থ্যবিধি মানাতে হিমশিম খাচ্ছে মার্কেট কর্তৃপক্ষ। সামাজিক দূরত্ব নেই বললেই চলে। ক্রেতাদের উদাসিনতাই স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত।

জামগড়া এলাকার বঙ্গ মার্কেটে কাপড় কিনতে এসেছেন ফারজানা। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের সবারই তো কাপড় কেনা দরকার। গত তিন ঈদে আমরা কেনা কাটা করতে পারি নাই।

অপর ক্রেতা আলিম বলেন, গত ঈদের আগে গাড়ি বন্ধ ছিল। বাড়ি যেতে পারি নাই। তাই কেনাকাটার দরকার হয় নাই। এবার বাড়ি যাব। সন্তানেরা মুখের দিকে চেয়ে আছে। তাদের জন্য কাপড় না কিনলে তারা মন খারাপ করবে। পরিবারের জন্যই তো শত শত মাইল দূরে এসে কাজ করছি। তাদের খুশিই আমার খুশি।

বাড়ইপাড়া ইসলামপুর মার্কেটের মালিক শহিদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে মার্কেট খুলেছি। অনেকদিন পর মার্কেট খোলায় ক্রেতার চাপ একটু বেশি। গেটে জীবাণুনাশকের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাস্ক ছাড়া কেউ ভেতরে প্রবেশ করতে পারছে না। 

সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদা বলেন, অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। মাস্কছাড়া বাইরে চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ। সবাই নিজ নিজ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে করোনা মোকাবিলা করা অত্যন্ত সহজ হবে।

এমএসআর