জাকির হোসাইন, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক

পবিত্র ঈদুল আজহার আগের রাত ১২টা ৩০ মিনিট। বড়লেখা পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ড থেকে একটি ফোন এল অক্সিজেনের সহায়তা চেয়ে। সঙ্গে সঙ্গেই অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন স্বেচ্ছাসেবকরা। পৌঁছে গেলেন রোগীর বাড়িতে। এভাবে দিনরাত বিরামহীন ছুটে চলে বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবা দিয়ে আসছেন ‘হিউম্যান অক্সিজেন সেবা’ সংগঠনের সদস্যরা।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তি, শ্বাসকষ্ট কিংবা অন্যান্য শ্বাসকষ্টজনিত রোগীদের কষ্ট দেখে বিনামূল্যে ২৪ ঘণ্টার এমন অক্সিজেন সেবা চালু করেছেন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন।

সংগঠনের ব্যানারে রোগীর বাসায় তারা পৌঁছে দিচ্ছেন অক্সিজেন সিলিন্ডার। আবার ব্যবহার শেষে তা সংগঠনের একদল সদস্য সংগ্রহ করে নিয়ে আসেন। অন্যদিকে আরেক দল রোগীদের বাড়িয়ে দিয়ে আসেন অক্সিজেনভর্তি সিলিন্ডার।

গত ২৪ মে এই কার্যক্রম উদ্বোধন করেন জাকির হোসা্ই। তার এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগকে জেলার জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলার স্থানীয় লোকজন প্রশংসার চোখে দেখছেন। গত এক মাসে এটি হয়ে উঠেছে এই অঞ্চলের সর্ববৃহৎ অক্সিজেন সেবা।

বড়লেখার মহুবল এলাকার বাসিন্দা গিয়াসউদ্দিন বলেন, সারা বড়লেখায় ও জুড়ীতে খোজ নিয়ে কোথাও কোনো অক্সিজেন পাইনি। ফ্রি  হিউম্যান সার্ভিসকে কল দিলে তারা বাড়িতে অক্সিজেন পৌঁছে দিয়ে গেছে। ঈদের আগের রাতেও তারা এই সেবা দিয়েছে। তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।

হিউম্যান অক্সিজেন সেবার বড়লেখা উপজেলার সমন্বয়ক রেহান পারভেজ রিপন ঢাকা পোস্টকে বলেন, পবিত্র ঈদুল আজহার রাতেও আমাদের অক্সিজেন সার্ভিসের কার্যক্রম অব্যাহত আছে। আজকের এই পবিত্র রজনীতেও আমরা মানুষকে সেবা দিতে পেরেছি। এস এম জাকির হোসাইন ভাইয়ের প্রতি প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা এমন একটি উদ্যোগ নেওয়ার জন্য।

সংগঠনটির জুড়ীর সদস্য ফয়ছল আহমদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, এখনো মানুষের অক্সিজেনের চাহিদা শেষ হয়নি। সে অনুভূতি বুঝতে পেরে হিউম্যান অক্সিজেন সেবা জুড়ী-বড়লেখায় দিনরাত পরিশ্রম করে বিনামূল্যে মানুষের বাড়িতে অক্সিজেন পৌঁছে দিচ্ছে। তবে চাহিদা অনুযায়ী জোগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তারপরও আমরা চেষ্টা করছি মানুষকে সর্বোচ্চ সেবা দিতে।

এ বিষয়ে এস এম জাকির হোসাইন ঢাকা পোস্টকে বলেন, করোনার এ মহামারির সময়ে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে দেখেছি অক্সিজেনের জন্য মানুষের হাহাকার। আমার এলাকা জুড়ী ও বড়লেখার মানুষ সহজে বা বিনামূল্যে অক্সিজেন পান না। যেতে হয় জেলা শহর কিংবা সিলেটে। তাই আমার এলাকায় অক্সিজেন সেবাটি চালু করেছি। দুই উপজেলার মানুষ এই সেবা পাচ্ছে।

তিনি বলেন, জুড়ী ও বড়লেখার সর্বস্তরের মানুষের প্রতি আহ্বান জানাব, আমাদের কেউ যদি করোনাসহ যেকোনো রোগে আক্রান্ত হন, আমাদের অবগত করবেন। আমরা আপনাদের কাছে অক্সিজেন পৌঁছে দেব। ফ্রি হিউম্যান সার্ভিস এ সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকরা আপনাদের সেবায় সব সময় নিয়োজিত থাকবেন।

ওমর ফারুক নাঈম/এনএ