ঠাকুরগাঁও শহরের খানকা শিমুলতলা এলাকায় খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হয়

আতিকুর রহমানের বাড়ি ঠাকুরগাঁও শহরের আকচা মুন্সিরহাট এলাকায়। দীর্ঘদিন ধরে তিনি হোটেল শ্রমিকের কাজ করছিলেন। এতে স্ত্রী-সন্তানসহ কোনোমতে চলে যাচ্ছিল তার সংসার। তার টেনেটুনে চলা সংসার জীবনে গত দুই বছর ধরে অন্ধকার নামিয়ে দিয়েছে মহামারি করোনা। দুই বছর ধরে করোনার কারণে একের পর এক লকডাউনসহ হোটেল ব্যবসার ধস নেমে যাওয়ায় আতিকুরকে এখন সংসার চালাতে হচ্ছে অন্যের কাছে সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে।

তার মতো অবস্থা একই এলাকার কাউসার আলীর। তিনি স্থানীয় একটি দোকানে মাসিক বেতনে কাজ করতেন। তার সেই কাজটি আর নেই। দোকান মালিকের ব্যবসার অবস্থাও খুব একটা ভালো না। তাই তিনি কাউসারকে বারণ করে দিয়েছেন। এরপর থেকে অসহায় জীবন কাটছে কাউসারের। তারও দৃষ্টি কোথাও কেউ সহযোগিতা করছে কীনা, সেদিকে।

একই অবস্থা ওই এলাকার পয়গাম আলী, ফারুক, আসমা বেগম, ময়নাল আলীসহ বহু মানুষের। তাদের দুরবস্থা দেখে তাক্ষণিকভাবে ৩৫ জনকে খাদ্যসামগ্রী দিয়ে সহযোগিতা করেছে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বাতিঘর।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও শহরের খানকা শিমুলতলা এলাকায় খাদ্যসামগ্রী হিসেবে তাদের চাল, ডাল, সয়াবিন তেল, পেঁয়াজ, লবণ, হলুদ ও মরিচের গুঁড়া দেওয়া হয়েছে।

এসময় পৌরসভার ১০নং ওয়ার্ডের কমিশনার ছুটু, এসএসএল ওয়ারল্যাস কোম্পানির কর্মকর্তা ইঞ্জিনিয়ার ইউসুব আলী ইমন, 
স্থানীয় অনলাইন নিউজপোর্টাল ক্রান্তিকালের সম্পাদক মাহবুবুল আলম রুবেল, সমাজসেবী জালালুর রহমান ও আব্দুল কাউয়ুম উপস্থিত ছিলেন।

খাদ্যসামগ্রী পেয়ে বাতিঘরের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন আকচা সামসনগর এলাকার হোটেল শ্রমিক লাইলি, একই এলাকার দিনমজুর দুলাল, অলি হোসেন, রাজু, আনোয়ার, বাবু হানিফ, রঞ্চিত ও বেগম।

তারা জানিয়েছেন, বাতিঘর থেকে যে সহযোগিতা তারা পেয়েছেন সেটি দিয়ে কিছুদিন হলেও তারা নিশ্চিন্তে খেতে পারবে।

কথা হয় বাতিঘরের প্রতিষ্ঠাতা শাহিনুর রহমান শাহিনের সঙ্গে। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, চাকরির সুবাদে ঢাকায় থাকছি অনেক দিন ধরে। তবে এলাকার অসহায় মানুষের খোঁজখবর রাখি নিয়মিত। অনেকদিন ধরে এসব মানুষের খারাপ অবস্থার কথা শুনে আসছি। এরপর বিষয়টি নিয়ে বাতিঘরে সব সদস্যের সঙ্গে আলোচনা করলে সবাই সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন। সেই সহযেগিতা দিয়েই এসব খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হলো।

তিনি বলেন, গত রমজানেও এতিম শিশুসহ ৬০ জন অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। চেষ্টা করছি বাতিঘরের মাধ্যমে অসহায় মানুষের অন্ধকার জীবনের সামান্য আলো দিতে। সবার অংশগ্রহণ বাড়লে সামনে আরও ভালো কিছু করব ইনশাল্লাহ।

এমএএস