বাদাম বিক্রি করছেন আব্দুল্লাহ

মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ। পেশায় ছিলেন ট্রাক চালক। ৩৮ বছর আগে কক্সবাজারে সড়ক দুর্ঘটনায় একটি পা হারান তিনি। ৩ মাস বিছানায় কাটিয়ে আবারও ফিরে আসেন জীবনযুদ্ধে।

আব্দুল্লাহর মতো অনেকেই পা হারিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করছেন। হাত পাতছেন অন্যের কাছে। কিন্তু আব্দুল্লাহ অন্যের কাছে ছোট হতে নারাজ। দুই পা নেই তো কি হয়েছে! এক পায়ে দাঁড়িয়ে স্বপ্ন দেখছেন বড় হওয়ার। নিজের পায়ে দাঁড়ানোর। নিজের যতটুকু আছে সেটুকু দিয়ে শুরু করেছেন ব্যবসা। 

প্রথমেই লোহাগড়া বাজারের এক পাশে বসে বিক্রি করতেন পান আর সিগারেট। পরে শুরু করেন চা বিক্রি। এতে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হতো আব্দুল্লাহর। পরে ছেলে একটু বড় হতেই বাবার সঙ্গে শুরু করেন চা বিক্রি। বাপ বেটার বেচাকেনায় ভালোভাবেই চলছে সংসার। এরই মধ্যে বিয়েও দিয়েছেন তিন মেয়ের। ছেলে এখন কক্সবাজারে টমটম চালান। আব্দুল্লাহ বিক্রি করেন বাদাম। প্রতিদিন সিদ্ধ বাদাম বিক্রি করে ৪০০-৫০০ টাকা আয় হয় আব্দুল্লাহর। এতে ভালোভাবেই সংসার চলছে তার।

জানতে চাইলে আব্দুল্লাহ বলেন, কক্সবাজারের হাশেমিয়া মাদরাসার সামনে সড়ক দুর্ঘটনায় একটি পা হারায়। পা হারিয়ে নিজেকে খুব অসহায় মনে হয়েছে। কিন্তু দমে যায়নি। মানুষের কাছে হাত পাতিনি। এ সময় পাশে ছিল আমার স্ত্রী। সব সময় আমাকে সাহস যুগিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, অনেকেই আমার এ অসহায়ত্বের সুযোগ নিতে চেয়েছে। আমি তাদের সুযোগ দেয়নি। এক পা নেই তো কি হয়েছে? আল্লাহর উপর ভরশা করে এগিয়ে গিয়েছি সামনের দিকে। নিজের উপার্জিত টাকায় তিন মেয়েকে বিয়েও দিয়েছি। কারো কাছে হাত পাতিনি। বাকিটা জীবন আল্লাহর উপর ভরসা রেখে কাজ করে খাবো।

আব্দুল্লাহর প্রতিবেশী ও লোহাগড়া বাজারের ওষুধের দোকানদার মিজানুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন পঙ্গু অবস্থায় আব্দুল্লাহ ভাইকে দেখছি। বাদাম বিক্রি করছেন অনেকদিন ধরে। মানুষ সাহায্য দিতে চাইলেও নেন না।

এসপি