সারাদিনের মতো রাতেও যানবাহনের চাপ কমেনি দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের যাতায়াতের অন্যতম প্রবেশদ্বার দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের দৌলতদিয়া প্রান্তে। যাত্রীবাহী বাসগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নৌরুট পারাপার করা হলেও পণ্যবাহী ট্রাকগুলো আটকা পড়ে আছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।

এতে চরম বিপাকে পড়েছেন পণ্যবাহী ট্রাকচালক ও তাদের সহযোগীরা। শুক্রবার (২৩ জুলাই) থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সরকার ঘোষিত ১৪ দিনের কঠোর লকডাউনের কারণে রাজধানী ফিরছেন মানুষ। লকডাউনে আটকে যাওয়ার ভয়ে কর্মস্থলে ফিরছেন তারা।

বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) রাতে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকায় ফেরি পারের অপেক্ষায় রয়েছে দুই শতাধিক যাত্রীবাহী বাস। এছাড়াও শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক ও ব্যক্তিগত প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসের চাপ তো রয়েছেই।

সরেজমিনে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, রাতেও ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দৌলতদিয়া ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে দৌলতদিয়া মডেল হাইস্কুল পর্যন্ত দুই কিলোমিটার এলাকায় তিন শতাধিক যানবাহন ফেরি পারের অপেক্ষায় রয়েছে। এর মধ্যে দুই শতাধিক যাত্রীবাহী বাস ও শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক রয়েছে। দীর্ঘক্ষণ সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে থেকে যাত্রীবাহী বাসের চালক ও যাত্রীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এছাড়াও পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাকের চালকরাও বিপাকে পড়েছেন।

পাংশা থেকে ঢাকাই যাচ্ছেন রুবেল হোসেন। দৌলতদিয়া ঘাটে এসে সিরিয়ালে আটকে রয়েছেন তিনি। আলাপকালে তিনি বলেন, স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়িতে গিয়েছিলাম। শুক্রবার থেকে ১৪ দিনের জন্য লকডাউন শুনে বিকেলে বাড়ি থেকে রওনা দিয়েছি ঢাকার উদ্দেশ্যে। অনেক সময় ধরে সিরিয়ালে আটকে রয়েছি। এখন খুব বিরক্ত লাগছে। ধীর গতিতে গাড়ি সামনের দিকে এগুচ্ছে তাই ফেরি পেতে এখনো অনেক দেরি।

মাগুরা থেকে ঢাকাগামী রাসেল নামের এক যাত্রী বলেন, ভোগান্তি হবে এটা জেনেও কর্মস্থলে ফিরছি। এতদিন বাড়িতে বসে থাকলে তো আর চলে না। তাই যত কষ্টই হোক রাতের মধ্যেই ঢাকায় ফিরতে হবে। গত বছর বাবা-মায়ের সঙ্গে কোরবানি দেওয়া হয়নি বলেই এবার বাড়িতে এসে ঈদ করেছিলাম। বাড়ি যাওয়ার সময়ও ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে, আবার ঢাকা ফেরার সময়ও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এ রুটে একটা পদ্মা সেতু হলে দক্ষিণবঙ্গের মানুষের আর ভোগান্তি পোহাতে হতো না।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের দৌলতদিয়া ফেরিঘাট শাখার ব্যবস্থাপক (ম্যানেজার) মো. শিহাব উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, সারাদিনের মতো রাতেও দৌলতদিয়া নৌরুটে চাপ রয়েছে। এই নৌরুটে যানবাহনের চাপ কমাতে ১৬টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে।

মীর সামসুজ্জামান/ওএফ