মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের শমশেরনগর ইউনিয়নের শিংরাউলী গ্রামের দরিদ্র নির্মাণ শ্রমিক ইসরাইল মিয়া (৬০)। স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে চার সদস্যের পরিবার তার। করোনার প্রভাবে আগের মত ঠিকমত কাজ করতে পারেন না। ফলে কখনো এক বেলা খেয়ে আবার কখনো না খেয়ে জীবনযাপন করছিলেন। গত ১৭ জুন তার স্ত্রী মায়া বেগম (৫০) মারা যান। 

শুক্রবার (২৩ জুলাই) স্ত্রীর চেহলামের আয়োজন করেছিলেন বাড়িতে। জুমার নামাজের পর তার প্রয়াত স্ত্রীর জন্য দোয়া হবে- সেই অপেক্ষায় ছিলেন নির্মাণ শ্রমিক ইসরাইল মিয়া। তবে বেলা সাড়ে ১১টায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে নিজ বাড়িতেই তিনি মারা গেছেন। বিকেল সাড়ে ৫টায় শিংরাউলী গ্রামের কবরস্থান সংলগ্ন মাঠে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়েছে। 

ইসরাইল মিয়ার প্রতিবেশী সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক ফয়েজ মিয়া জানান, কোনো সরকারি সহায়তা না পেয়ে নির্মাণ শ্রমিক ইসরাইল মিয়া প্রায় ৮ মাস আগে সরাসরি কমলগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে গিয়ে নিজের জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি জমা দিয়েছিলেন ভবিষ্যতে সহায়তা পাওয়ার আশায়। তিনি খুবই কষ্টে তার সংসার পরিচালনা করতেন। এরই মাঝে নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে ৩৬ দিন আগে তার স্ত্রী মায়া বেগম মারা যান। শুক্রবার স্ত্রীর চেহলামের আয়োজন করেছিলেন। বড় দুঃখের বিষয় স্ত্রীর চেহলামে দোয়া করার আগেই তিনিও নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন।

ফয়েজ মিয়া আরও বলেন, নিজে নির্মাণ শ্রমিক হয়েও ছেলেকে কষ্ট করে খেয়ে না খেয়ে মৌলভীবাজার সরকারি কলেজে (সম্মানে) পড়াচ্ছিলেন ইসরাইল। আর মেয়ে দশম শ্রেণিতে পড়ছে। এখন কেউ সহায়তা না করলে ইসরাইল মিয়ার ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে।

কমলগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের অফিস সহকারী সুমন পাল বলেন, ইসরাইল মিয়ার সরকারি সহায়তা পাওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন ছিল।

শমশেরনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. জুয়েল আহমেদ স্ত্রীর চেহলামের দিন নির্মাণ শ্রমিক ইসরাইল মিয়ার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

ওমর ফারুক নাঈম/আরএআর