রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের স্টোর থেকে তিনটি ট্রাকে করে অক্সিজেন সিলিন্ডার পাচার চেষ্টার ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। এ মামলায় ছয়জনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। তারা ওই তিন ট্রাকের চালক ও হেলপার।

ভুয়া চালানের মাধ্যমে প্রতারণা করে অক্সিজেন সিলিন্ডার নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে মামলাটি করেছেন রমেক হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার মাহমুদ হাসান। শুক্রবার (২৩ জুলাই) রাতে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি থানায় মামলার এজাহার দেন তিনি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রশিদ জানান, শনিবার মামলা গ্রহণের পর তিন ট্রাকের চালক ও হেলপারদের প্রতারণার মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। পরে তাদেরকে আদালতে মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এ মামলায় ছয়জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।

গ্রেফতাররা হলেন ট্রাকচালক জহুরুল ইসলাম (৪৩), হাবিল (২৯) ও সুজন হোসেন (২৯) এবং হেলপার সাঈদ হাসান (২৯), সাইফুল ইসলাম (৩৪) ও আশিক রায় (২৮)। তাদের বাড়ি দিনাজপুর জেলায়।

এদিকে সরকারি হাসপাতাল থেকে প্রতারণার মাধ্যমে অক্সিজেন সিলিন্ডার সরানোর চেষ্টার ঘটনাটিকে গুরুত্ব সহকারে পুলিশ দেখছেন বলে দাবি করেন ওসি আব্দুর রশিদ। তিনি আরও বলেন, পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই প্রতারক চক্রের সঙ্গে আরো কেউ জড়িত রয়েছে কি না, তা উদঘাটন হবে বলে আশা করছি।

করোনাকালে অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যাপক চাহিদার কারণে কোনো প্রতারক চক্র সুকৌশলে সরকারি এই হাসপাতাল থেকে সিলিন্ডার সরানোর পরিকল্পনা করেছিল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

মামলার বাদী ওয়ার্ড মাস্টার মাহমুদ হাসান ঢাকা পোস্টকে জানান, শুক্রবার (২৩ জুলাই) দিনাজপুর থেকে আসা খালি ট্রাক তিনটি চালান নিয়ে স্টোরে যোগাযোগ করলে সন্দেহ তৈরি হয়। পরে তাদের আটক করে বিষয়টি পুলিশে জানানো হয়। ওই দিন ঢাকা থেকে হাসপাতালে এক ট্রাক অক্সিজেন সিলিন্ডার আসার কথা ছিল।

এ ঘটনায় হাসপাতাল থেকে কোনো তদন্ত কমিটি করা হয়নি জানিয়ে হাসপাতালের পরিচালক ডা. রেজাউল করিম ঢাকা পোস্টকে জানান, পুরো ঘটনাটি প্রতারণার ফাঁদ হতে পারে। তবে কে বা কারা এর সঙ্গে  জড়িত তা তদন্ত করতে পুলিশকে বলা হয়েছে। হাসপাতালের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে এটি কোনো চক্রের ষড়যন্ত্র হতে পারে।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার (২৩ জুলাই) দুপুরে ঢাকার মহাখালীতে স্বাস্থ্য বিভাগের কেন্দ্রীয় স্টোর রুমে অক্সিজেন সিলিন্ডার নেওয়ার জন্য দিনাজপুর থেকে ৩টি ট্রাক আসে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে। জমা দেওয়া চালানপত্র দেখে সন্দেহ হলে স্টোর ইনচার্জ মেডিকেল প্রশাসনকে বিষয়টি জানান।

মেডিকেল প্রশাসন কেন্দ্রীয় স্টোরে যোগাযোগ করে নিশ্চিত হয় সিলিন্ডার ঢাকায় নেওয়ার কোনো চিঠি বা নির্দেশনা তারা দেননি। পরে ঘটনাটি জানাজানি হলে ট্রাকচালক ও হেলপারদের আটক করে পুলিশ। ওই ঘটনায় ট্রাক তিনটি জব্দ করে কোতোয়ালি থানায় নেওয়া হয়।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এমএসআর