১০ বছর আগে আকাশ-বাতাসকে সাক্ষী রেখে বিয়ে করেছিলেন শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও অপর একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। এ বিয়ের ওপর ভিত্তি করেই এত দিন ধরে চলছিল তাদের অবৈধ সম্পর্ক। 

গত বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) রাতে এ দুজনকে ওই প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে হাতে নাতে আটক করে স্থানীয়রা। বিয়ে নিয়ে গড়িমসি করায় শনিবার (২৪ জুলাই) সখিপুর থানায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন শিক্ষিকা।

শিক্ষিকা বলেন, ১০ বছর ধরে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে ধর্ষণ করে আসছিলেন ওই প্রধান শিক্ষক। তার সঙ্গে সম্পর্কের কারণে আগের স্বামী তালাক দিয়েছেন। ধর্মের দোহাই দিয়েও বিয়ে করেছিলেন। দিনের পর দিন ধর্ষণ করে আসলেও বিয়ে করেনি। গত বৃহস্পতিবার রাতে বিয়ে করবে বলে আমাকে বাড়িতে ডেকে নেয়। এ সময় বাড়িতে কেউ নেই ও বিয়ের জন্য কাজী ডেকে এনেছেন এমনটা বলেছিলেন তিনি। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখি কেউ নেই। এ সময় তিনি আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। পরে এলাকার লোকজন এসে আমাকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যান। নিরুপায় হয়ে আমি থানায় মামলা করেছি।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ১০ বছর আগে আকাশ ও বাতাসকে সাক্ষী রেখে বিয়ে করেন তারা দুইজন। বিয়ের পর কাবিন না করেই সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন। এরপর থেকে বেশ কয়েকবার শারীরিক সম্পর্ক করেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে প্রধান শিক্ষক তাকে ডেকে পাঠান। সেখানেও জোরপূর্বক ধর্ষণ করা হয়। পরে স্থানীয় এসে তাকে উদ্ধার করেন। ২০১৫ সালে অন্য শিক্ষিকার সঙ্গেও অবৈধ সম্পর্ক গড়েছিল ওই প্রধান শিক্ষকে। সে সময় দুই লাখ টাকা দিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়েছিল।

ভেদরগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সুলতানা রাজিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রধান শিক্ষকের মোবাইলে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার তোফায়েলকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটির করা হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা পেলে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সখিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান হাওলাদার বলেন, একজন শিক্ষিকা লিখিত অভিযোগ করেছেন। সঠিক তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর আল নাসীফ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ফোনে ওই শিক্ষিকা আমাকে ঘটনার কথা জানিয়েছেন। আমি সখিপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করার জন্য বলেছি। অভিযোগ প্রমাণ হলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/ওএফ