অন্যের রান্নাঘরে থাকা বৃদ্ধের জন্য ওসির উপহার
অন্যের রান্নাঘরে থাকেন আলী আশরাফ (৭০)। নিজের জায়গা-জমি বলতে কিছু নেই। শারীরিকভাবে কাজকর্ম করতে পারেন না। অন্যের দ্বারে দ্বারে ঘুরে যা পান, তা-ই খান। তার অসহয়ত্বের কথা শুনে ডামুড্যা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরীফ আহমেদ খাদ্যসামগ্রী ও জামা-জুতা নিয়ে হাজির হন তার কাছে। তার এই মহানুভবতায় মুগ্ধ হন সবাই।
শরীয়তপুরের ডামুড্যা পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ ডামুড্যা গ্রামের বাসিন্দা আলী আশরাফ। তিনি রুমান আতষ্করের রান্নাঘরে ছয় বছর ধরে বসবাস করছেন।
বিজ্ঞাপন
জানা যায়, গত শনিবার ওসি শরীফ আহমেদ গরিব মানুষের অবস্থা দেখার জন্য এলাকায় ঘুরতে বের হন। তিনি দক্ষিণ ডামুড্যা গ্রামের আতষ্কর বাড়ির সামনে আলী আশরাফকে দেখেন। তখন তাকে জিজ্ঞেস করেন, আপনি এখানে ঘুরছেন কেন? তখন আলী আশরাফ বলেন, আমার নিজের ঘরবাড়ি নাই। আমার স্ত্রী ২০ বছর আগে মারা গেছে। আমি অন্যের একটি রান্নাঘরে থাকি। আমার বাসায় খাবার নাই। রান্না করারও কেউ নাই। আমার পরার মতো কোনো পোশাক নাই। খুবই কষ্টে জীবন যাপন করছি।
কথাগুলো শোনার পর ওসি শরীফ আহমেদ কেঁদে ফেলেন। সঙ্গে সঙ্গেই তিনি বাজারে গিয়ে তার জন্য চাল, ডাল, তেল, মোরগ, পাঞ্জাবি, জুতা নিয়ে আসেন। তারপর এগুলো আলী আশরাফের হাতে তুলে দেন তিনি।
অসহায় বৃদ্ধ আশরাফ আলী বলেন, ওসি আমার জন্য চাল, ডাল, তেল, মোরগ, পাঞ্জাবি, লুঙ্গি ও জুতা নিয়ে এসেছেন। আমি তার জন্য দোয়া করি। আল্লাহ সব সময় উনাকে ভালো রাখবেন।
প্রতিবেশী হারুন আতষ্কর বলেন, আলী আশরাফের বাড়িঘর নেই। তিনি খুবই কষ্টে আছেন। তিনি রুমান আতষ্করের রান্নাঘরে থাকেন। ওসি সাহেব তার অবস্থার কথা শুনে এগিয়ে এসেছেন। এটা খুবই ভালো কাজ করেছেন তিনি।
ডামুড্যা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরীফ আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার বাবা মারা গিয়েছেন। আজ আমার বাবা বেঁচে থাকলে আমি তার জন্য যা যা করতাম, এখানে তা-ই করেছি। আমি অনুরোধ করব, আপনার যারা বিত্তবান আছেন, তারা এই কঠিন মুহূর্তে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ান। কারণ, মানুষ মানুষের জন্য।
তিনি বলেন, পুলিশের চাকরি পাওয়ার পর দেশসেবা ও মানবসেবার ব্রত নিয়ে এগিয়ে চলছি। অসহায় ও দরিদ্র মানুষের সেবা করার জন্য সব সময় কিছু করার চিন্তা নিয়ে এগোতে থাকি।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/এনএ