করোনা আক্রান্ত হয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন আকলিমা খাতুন (৬০)। উপসর্গ ও অনান্য শারীরিক জটিলতা নিয়ে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তার মা আলিয়া বেগম (৭৮)। মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) সকালে করোনার কাছে হেরে যান আকলিমা। মেয়ের মৃত্যুর খবর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মাকে জানানো হলে তিনিও মারা যান। পরে তাদের একসঙ্গে পাশাপাশি কবরে দাফন করা হয়। এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে রাজবাড়ী সদর উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের রায়নগর গ্রামে।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আকলিমা খাতুনের করোনার উপসর্গ দেখা দিলে প্রথমে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি করা হয়। এদিকে আকলিমার মা আলেয়া বেগম করোনার উপসর্গ এবং বার্ধক্যজনিত জটিলতা নিয়ে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার শারীরিক অবস্থা মোটামুটি ভালো ছিল। 

কিন্তু মঙ্গলবার করোনার কাছে হেরে যায় মেয়ে আকলিমা। সকাল ১০টায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পরে তার মরদেহ রামকান্তপুর ইউনিয়নের রায়নগর গ্রামে নিয়ে আসা হয়। মা আলেয়া তখনো জানতেন না তার আদরের মেয়ে আকলিয়া আর নেই। আকলিমার পরিবার তার দাফনের ব্যবস্থা করছিল। ঠিক তখন মেয়ের মৃত্যুর খবর মাকে জানানো হয়। এর কিছু সময় পর আলেয়া স্ট্রোক করে মারা যান। এরপর তার মরদেহটিও বাড়িতে আনা হয়। পাশাপাশি কবরে মা-মেয়েকে দাফন করা হয়।

আকলিমা-মোস্তাক দম্পতির কোনো সন্তান ছিল না। মোস্তাক খুলনায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর তারা রামকান্তপুর রায়নগর গ্রামে বসবাস করতেন।

সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রমজান আলী খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আকলিমা করোনা আক্রান্ত হলে তার মা আলেয়া সেবা-যত্ন করে আসছিল। পরে আকলিমার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে প্রথমে সদর হাসপাতাল ও পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই সে চিকিৎসাধীন ছিল। মেয়ের সেবা-যত্ম করে আলেয়াও করোনা আক্রান্ত হন। 

আলেয়া রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সকাল ১০টায় আকলিমা মারা গেলে তার দাফন-কাফনের ব্যবস্থা শুরু করা হয়। পরে আকলিমার মৃত্যুর সংবাদটি মাকে জানানো হলে দুপুর একটার দিকে তিনিও মারা যান। পরে আরও একটি কবর খোঁড়া হয়। একসঙ্গে জানাজা নামাজ শেষে পাশাপাশি কবরে তাদের দাফন করা হয়েছে।

মীর সামসুজ্জামান/এসপি