বাসায় গিয়ে রাজশাহীর তানোরের উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে করোনার টিকাদানের ঘটনায় শাস্তির মুখে পড়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পোর্টার নিশান মন্ডল। এরই মধ্যে তাকে শোকজ করা হয়েছে।

বুধবার (১১ আগস্ট) জেলার সিভিল সার্জন ডা. কাইয়ুম তালুকদার তাকে তিনদিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন।

তবে এ ঘটনায় পার পেয়ে যাচ্ছেন নিশানের সঙ্গে টিকা দিতে যাওয়া ইপিআই এর মেডিকেল টেকনিশিয়ান জহির উদ্দিন। আড়াল করা হয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. বার্নাবাস হাঁসদাককে। তাদের দুজনের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না সিভিল সার্জন দফতর।

এর আগে গত মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে পৌর সদরের সরকারি বাসায় বসে টিকা নেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না। 

নির্ধারিত টিকাদান কেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চেয়ারম্যানের বাসার দূরত্ব প্রায় দুই কিলোমিটার। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. বার্নাবাস হাঁসদাকের নির্দেশে চেয়ারম্যানের বাসায় ভ্যাকসিন নিয়ে যান জহির উদ্দিন ও নিশান মণ্ডল। টিকাদানকর্মী জহির উদ্দিন টিকা পুশ না করে পোর্টার নিশান মন্ডলকে দিয়ে পুশ করান। 

পরে চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত সহকারী পরিচয়দানকারী জামিলুর রহমান টিকাদানের সেই ছবি মোবাইলে ধারণ করে সামাজিক যোগোযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেন। পরে সমালোচনার ‍মুখে সেই ছবি মুছেও দেন জামিল।

বাসায় বসে টিকা নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে ওই সময় চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না জানিয়েছিলেন, তার অনুরোধেই টিএইচও টিকা নিয়ে বাসায় ওই দুজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে পাঠিয়েছিলেন। ওই সময় টিএইচও জানিয়েছিলেন- নিশান ভালো টিকা দেন, সেই সুবাদে তিনি তার কাছে টিকা নিয়েছেন।

 চেয়ারম্যানের বাসায় দুই কর্মীসহ টিকা পাঠানোর বিয়ষটি স্বীকার করেন তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. বার্নাবাস হাঁসদাক নিজেও।

এ নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হলে টনক নড়ে সিভিল সার্জন দফতরের। চেয়ারম্যানকে তার বাসায় গিয়ে টিকাদান অপরাধ হিসেবে ধরে নিচ্ছেন সিভিল সার্জন ডা. কাইয়ুম তালুকদার।

তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, আইনত তিনি (পোর্টার) কোনোভাবেই উপজেলা চেয়ারম্যানকে তার বাসায় গিয়ে টিকা দিতে পারেন না। তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। 

সিভিল সার্জনের ভাষ্য, চেয়ারম্যানকে প্রশ্ন করার এখতিয়ার আমাদের নেই। কিন্তু আমরা স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রশ্ন করতে পারি। তাই আমরা জানতে চেয়েছি কেন তিনি এ কাজ করেছেন। তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। আগামী তিনদিনের মধ্যে এ নোটিশের জবাব দিতে হবে। 

তবে চেয়ারম্যানের বাসায় ভ্যাকসিনসহ দুই কর্মীকে পাঠানোর ঘটনায় টিএইচও দায়ী কীনা জানতে চাইলে মন্তব্য করতে রাজি হননি সিভিল সার্জন। তাকে আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে কীনা সেই বিষয়েও মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

ফেরদৌস সিদ্দিকী/এমএএস