রসনাবিলাসের মতো তৈরি করা হয় চৌধুরী বাজারের শাহ মোস্তফা টি পয়েন্টের মালাই চা

এক কাপ মালাই চা। যা খেতে মানুষের ভিড় লেগে যায়। সকাল থেকে বিকেল, সন্ধ্যা থেকে রাত―সব সময় এই চায়ের বাজার থাকে জমজমাট। অনেক দূর থেকে লোকজন আসেন সুস্বাদু এ মালাই চায়ের কাপে চুমুক দিতে। এমনই কদর ছড়িয়েছে শাহ মোস্তফা টি পয়েন্টের মালিক ইকবাল হোসেনের ‘এক কাপ চা’।

মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার চৌধুরী বাজারের শাহ মোস্তফা টি পয়েন্টের মালাই চা সুনাম ছড়িয়েছে অনেক দূর। দুই বছর আগে মালাই চায়ের এই পদ শুরু করেছিলেন ইকবাল আহমদ। অল্প দিনের মধ্যেই তার দোকানের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে চারদিকে। এখন চা-প্রেমীদের পছন্দের ঠিকানা চৌধুরী বাজারের টি পয়েন্ট।

দেশের সিংহভাগ চা উৎপাদন হয় মৌলভীবাজার জেলায়। যে কারণে অন্যান্য জেলার তুলনায় এই জেলায় চায়ের একটা গৌরব ও ঐতিহ্য রয়েছে। যতই রমরমা পানীয় থাকুক, চায়ের কোনো বিকল্প নেই। রাজনগরের এই মালাই চা তার সুনাম কুড়িয়েছে জেলাজুড়ে। চা-প্রেমীদের কাছে এই চায়ের কদর রসনা বিলাসের মতোই।

২০ টাকা দামের এক কাপ চা তৈরি করেন করা হয় বিভিন্ন প্রণালি দিয়ে। প্রতিদিন ডেইরি ফার্ম থেকে দুধ সংগ্রহ করে সেগুলো যথাযথ নিয়মে মালাইয়ের জন্য প্রস্তুত করেন ইকবাল। মজাদার করার গোপন কৌশল শিখেছিলেন কয়েক বছর আগেই। এরপর থেকে তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। যে-ই তার দোকানের কাপে চুমুক দেন, সে-ই ভক্ত হয়ে যান। পরের বার আসেন আরও জনা পাঁচ-দশেকসহ।

মালাই চায়ের কারিগর ইকবাল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, মালাই চা তৈরি করি খাঁটি গরুর দুধ থেকে। অন্যান্য যে চা তৈরি করি, সেগুলো গরু ও পাউডার দুধের মিশ্রণে। কিন্তু মালাই তৈরি হয় শুধুই গরুর দুধ দিয়ে। প্রতিদিন প্রায় ৪০ লিটার গরুর দুধের প্রয়োজন হয়।

দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসেন মালাই চা পান করতে

চা খেতে রাজশাহী থেকে এসেছেন রুহেল আহমদ। তার সঙ্গে কথা হয় ঢাকা পোস্টের। তিনি বলেন, করোনার কারণে সাধারণত বাইরে চা খাই না। শুনলাম এখানে ভালো চা হয়। আসলে চা-টা খুব ভালো, বিখ্যাত চা। তার সঙ্গে থাকা শাহাদাত হোসেনের অনুভূতিও এমন।

কুলাউড়া থেকে আসা নাদেল বলেন, অনেক দূর থেকে এসেছি এই চা পান করতে। শুনেছি এখানের চা খুব ভালো ও মজাদার।

এলাকার বাসিন্ধা রাহুল বলেন, রাজনগর উপজেলার চৌধুরী বাজারের এই চা ঘোটা জেলার সংস্কৃতিকে মানুষের কাছে তুলে ধরেছে। ফেসবুকসহ বিভিন্ন জায়গায় আমাদের বাজারের এই চা মানুষ শেয়ার করছেন। সন্ধ্যার পর এখানে এলেই দেখা যায় মানুষে ভর্তি। কেউ দাঁড়িয়ে চা পান করছেন, কেউ বসে। বলা যায়, জায়গাই পাওয়া যায় না।

চা ভালো হওয়ায় একজন খেয়ে আরেকজনের কাছে সুনাম বলেন। এ রকম বাড়তে বাড়তে মোটামুটি একটা পরিচয় হয়ে গেছে। এখন আমি ছাড়া আরও ছয়টা পরিবার চলে আমার এই দোকানের আয় থেকে।

ইকবাল হোসেন, স্বত্বাধিকারী, শাহ মোস্তফা টি পয়েন্ট

মৌলভীবাজার থেকে আসা কামরুল হাসান বলেন, শহর থেকে প্রতিদিনই লেকজন আসেন। তারা ফেসবুকে চেকইন দেন যে রাজনগরের চা অনেক সুস্বাদু। এটা জেনেই এখানে আসা। বাস্তবে চা পান করে দেখলাম অনেক মজাদার। ফেসবুকে যে রকম বলা হয়, তার চেয়েও অনেক বেশি সুস্বাদু এই চা।

শাহ মোস্তফা টি পয়েন্টের মালিক ইকবাল বলেন, চা ভালো হওয়ায় একজন খেয়ে আরেকজনের কাছে সুনাম বলেন। এ রকম বাড়তে বাড়তে মোটামুটি একটা পরিচয় হয়ে গেছে। এখন আমি ছাড়া আরও ছয়টা পরিবার চলে আমার এই দোকানের আয় থেকে।

অতিপ্রয়োজনীয় ও লোভনীয় পানীয় চা। দেশের সিংহভাগ চা উৎপাদন হয় মৌলভীবাজার জেলায়। যে কারণে অন্যান্য জেলার তুলনায় এই জেলায় চায়ের একটা গৌরব ও ঐতিহ্য রয়েছে। যতই রমরমা পানীয় থাকুক, চায়ের কোনো বিকল্প নেই। রাজনগরের এই মালাই চা তার সুনাম কুড়িয়েছে জেলাজুড়ে। চা-প্রেমীদের কাছে এই চায়ের কদর রসনা বিলাসের মতোই।

এনএ