বগুড়া জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবন

জেলা ও দায়রা জজকে প্রত্যাহারের দাবিতে বগুড়া আইনজীবী সমিতি (বার) আগামী রোববার থেকে জেলা ও দায়রা জজ আদালত অনির্দিষ্টকালের জন্য বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) বিকেলে জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সোমবার (১১ জানুয়ারি) বগুড়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হত্যা মামলার আসামিকে জামিন না দেওয়ায় বিচারকের সঙ্গে এক আইনজীবীর বাগবিতণ্ডা হয়। ওই সময় আইনজীবীকে গ্রেপ্তারের আদেশ দেন বিচারক। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেন আইনজীবীরা।

বগুড়া আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, সোমবার এক মামলার জামিন শুনানিতে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক নরেশ চন্দ্র সরকারের সঙ্গে সিনিয়র আইনজীবী রেজাউল করিম মন্টুর বাগবিতণ্ডা হয়। বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার আইনজীবী সমিতির জরুরি সভা হয়। সভায় জেলা ও দায়রা জজ নরেশ চন্দ্র সরকারকে প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। তাকে প্রত্যাহারের দাবিতে জেলা ও দায়রা জজ আদালত আগামী রোববার (১৭ জানুয়ারি) থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বর্জন করবেন আইনজীবীরা। 

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য আইনজীবী রেজাউল করিম মন্টু বলেন, বগুড়ার গাবতলী উপজেলার একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারকৃত আসামির জামিনের শুনানি ছিল জেলা ও দায়রা জজ আদালতে। ওই হত্যা মামলায় জামিন আবেদন করা আসামির নাম এজাহারে নাম নেই। রিমান্ডে নিয়ে তার কাছে কোনো তথ্য পাননি তদন্ত কর্মকর্তা। তাকে সন্দেহের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করে জেলে রাখা হয়েছে। তাই তার জামিন আবেদন করা হয়। কিন্তু বিচারক তার জামিন নামঞ্জুর করেন। তখন তার জামিনের বিষয়ে যথাযথ কারণ উপস্থাপন করলে আমাকে গ্রেপ্তারের আদেশ দেন বিচারক। এ সময় কয়েকজন আইনজীবী আমাকে আদালত থেকে বের করে নিয়ে যান।

তিনি বলেন, এমন অপ্রীতিকর ঘটনার জন্য বগুড়া বারে অভিযোগ করেছি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক নরেশ চন্দ্র সরকারকে প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। তাকে প্রত্যাহারের দাবিতে আগামী রোববার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য আদালত বর্জন করবেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবীরা। 

সভায় সভাপতিত্ব করেন বগুড়া আইনজীবী সমিতির সভাপতি শফিকুল ইসলাম। এতে বক্তব্য রাখেন বগুড়া বারের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, আদালতের পিপি আব্দুল মতিন, নরেশ মুখার্জি, আশিকুর রহমান সুজন ও জাকির হোসেন নবাব। 

বগুড়া আইনজীবী সমিতি ও আদালত সূত্রে জানা যায়, জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় হত্যা মামলার জামিন শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন বার কাউন্সিলের সদস্য রেজাউল করিম মন্টু। এ সময় হত্যা মামলার আসামির জামিন চান রেজাউল করিম।

শুনানি শেষে জেলা জজ আদালতের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ নরেশ চন্দ্র সরকার আসামির জামিন নামঞ্জুর করেন। জামিন নামঞ্জুর করায় আইনজীবী রেজাউল করিম মন্টু পুনরায় জামিন আবেদন করেন। এ নিয়ে বিচারকের সঙ্গে তর্কবির্তক হয় আইনজীবীর। এ অবস্থায় আইনজীবী রেজাউল করিম মন্টুকে গ্রেপ্তারের আদেশ দেন বিচারক। তখন ঘটনাস্থলে থাকা অন্যান্য আইনজীবীরা মন্টুকে আদালত থেকে বের করে নিয়ে যান।

এএম