ভোটার উপস্থিতি তেমন না থাকলেও রয়েছে নিরাপত্তা বলয়

রাজশাহীর ভবানিগঞ্জ পৌরসভায় ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন ধানের শীষ প্রতীকের মেয়র প্রার্থী আব্দুর রাজ্জাক প্রামানিক। ভোটকেন্দ্রে ভোটদানে বাধা এবং কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগে এই ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

স্থানীয়রা জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পৌরসভার শহীদ সেকেন্দার মেমোরিয়াল আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে যান ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী আবদুর রাজ্জাক প্রামানিক।

বেরিয়ে এসে তিনি জানান, নৌকার সমর্থকরা তাকে ভোট দিতে দেননি। তাকে কেন্দ্র থেকে জোর করে বের করে দিয়েছেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।

জানা গেছে, শহীদ সেকেন্দার মেমোরিয়াল আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটার রয়েছেন দুই হাজার ২১৬ জন। এটিই পৌরসভার সর্বাধিক ভোটারের ভোটকেন্দ্র। আগে থেকেই কেন্দ্রটি বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। নিরাপত্তা বিবেচনায় এবারও ঝুঁকিপূর্ণের তালিকায় রাখা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, এখানেই বিএনপি প্রার্থী আবদুর রাজ্জাক প্রমানিকের বাড়ি। এ ওয়ার্ডটি ধানের শীষের ভোট ব্যাংক হিসেবে পরিচিত। গত পৌরসভা নির্বাচনে আবদুর রাজ্জাকের সঙ্গে বর্তমান মেয়র ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবদুল মালেকের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় এই কেন্দ্রে। ওই সময় ভোটকেন্দ্রে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছিল।

আবদুর রাজ্জাক প্রামানিক অভিযোগ করে জানান, কেন্দ্রে ভোট দিতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থকরা তাকে গলাধাক্কা দিয়ে বের করে দেন। মেয়র প্রার্থী হয়েও তাকে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। তাহলে ভেবে দেখুন সাধারণ ভোটারদের কি অবস্থা?

ধানের শীষ প্রতীকের এই প্রার্থী আরও অভিযোগ করে বলেন, পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের সবগুলো থেকেই বিএনপির এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। আর এ এজন্য তিনি ভোট বর্জন করেছেন।

তবে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীর অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করেছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবদুল মালেক মন্ডল। তিনি দাবি করেন, নির্বাচন নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হচ্ছে। সবাই নির্বিঘ্নে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিচ্ছেন।

ভোটদানে বাধা দেওয়া এমনকি কেন্দ্রে থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগের ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছেন বাগমারা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক আহম্মেদ। তিনি বলেন, ওই ভোটকেন্দ্রটি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় অসংখ্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কেন্দ্রে বাড়তি নজরদারিও রয়েছে। সেখানে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেনি। তবে ভোটকেন্দ্র থেকে বেরিয়ে এসে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।

ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীর ভোট বর্জনের ঘোষণা ভোটার উপস্থিতিতে কোনো প্রভাব ফেলেনি বলে দাবি করেছেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা। তিনি বলেন, সকাল থেকেই ভোটাররা লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিচ্ছেন। শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই চলছে ভোটগ্রহণ।

নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ভবানিগঞ্জে মোট ভোটার রয়েছেন ১৪ হাজার ৪০৪ জন। এখানে চার মেয়র প্রার্থী ছাড়াও ভোটের মাঠে রয়েছেন ১৩ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর এবং ৩০ জন সাধারণ কাউন্সিলর। এখানেও ৯টি কেন্দ্রে চলছে ভোটগ্রহণ।

ভবানিগঞ্জ বাদেও নির্বাচন হচ্ছে রাজশাহীর কাঁকনহাট ও আড়ানী পৌরসভায়। এর মধ্যে একমাত্র ভবানীগঞ্জেই ভোট হচ্ছে ব্যালটে। অন্য দুই পৌরসভায় ভোট হচ্ছে ইভিএমে।

আড়ানী পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার ১৩ হাজার ৮৮৪ জন। তিন মেয়র প্রার্থী ছাড়াও এই পৌরসভায় ২৯ জন সাধারণ কাউন্সিলর এবং ১০ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ভোটগ্রহণ হচ্ছে এখানকার ৯টি কেন্দ্রে।

অন্যদিকে, কাঁকনহাট পৌরসভায় মোট ভোটার ১৩ হাজার ৩৩৮ জন। এই পৌরসভায় দুই মেয়র প্রার্থী ছাড়াও এই পৌরসভায় ৩৩ জন সাধারণ কাউন্সিলর ও ১৩ জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন। এই পৌরসভার ১১ কেন্দ্রে
ভোট দিচ্ছেন ভোটাররা।

এসপি