সারাদেশের পর্যটন কেন্দ্র খুলেছে ১৯ আগস্ট। তবে পর্যটন কেন্দ্র, মাছ-কাঁকড়া শিকারে নিষেধাজ্ঞার কারণে খোলেনি সুন্দরবনের দুয়ার। এবার সুন্দরবন ভ্রমণে পর্যটকদের সেই অপেক্ষার অবসান ঘটছে। আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে সুন্দরবন। তবে পর্যটকদের মানতে হবে বনবিভাগের শর্তাবলী।  

রোববার (২৯ আগস্ট) বন বিভাগ ও ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অফ সুন্দরবন, খুলনার নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বনবিভাগের কর্মকর্তাদের এক সভায় পর্যটকদের জন্য সুন্দরবনের পর্যটন স্পট খুলে দেওয়ার এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। খুলনা অঞ্চলিক বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে গত বছর ১৯ মার্চ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত প্রায় ৭ মাস সুন্দরবনে পর্যটক প্রবেশ বন্ধ ছিল। পরবর্তীতে খুলে দেওয়া হয়। ফের করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে চলতি বছরের ৩ এপ্রিল থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনে পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বনবিভাগ।

করোনা সংক্রমণ রোধে তা বাড়ানো হয়। একইসঙ্গে মাছ ও কাকড়া শিকারে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। ফলে ১৯ আগস্ট সারাদেশের পর্যটন কেন্দ্র খুললেও নিষেধাজ্ঞা ছিল সুন্দরবন ভ্রমণে। সেই নিষেধাজ্ঞা উঠছে আগামী ৩১ আগস্ট। ফলে ১ সেপ্টেম্বর থেকে খুলে যাচ্ছে সুন্দরবনের দুয়ার।  

খুলনা অঞ্চলিক বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো ঢাকা পোস্টকে বলেন, ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তিন মাস সুন্দরবনে সব প্রকার মৎস্য ও কাঁকড়া শিকার বন্ধ রাখার ঘোষণা রয়েছে। ওইদিন নিষেধাজ্ঞা উঠে যাচ্ছে। ফলে মন্ত্রিপরিষদ অনুমোদিত ‘সুন্দরবন ভ্রমণ’ নীতিমালা অনুসরণ করে আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে পর্যটকদের জন্য সুন্দরবন উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। উপযুক্ত স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। প্রত্যেকটা লঞ্চে ৭৫ জনের বেশি পর্যটক নেওয়া যাবে না। উল্লেখিত নীতিমালা অমান্য করে কোনো ট্যুর অপারেটর অধিক পর্যটক বহন বা পরিবেশ বিঘ্নিত করলে তার বিরুদ্ধে বন বিভাগ আইনগত ব্যবস্থা নেবে।

তিনি জানান, সুন্দরবনের পূর্ব ও পশ্চিমে কটকা, দুবলারচর, করমজল, হারবাড়িয়া, কলাগাছিয়া, কচিখালীসহ সাতটি পর্যটন স্পট রয়েছে। এসব স্থানে সাধারণত পর্যটকরা ভ্রমণে আসে।  

ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এম নাজমুল আযম ডেভিড জানান, অবশেষে পর্যটকদের জন্য সুন্দরবন কেন্দ্রিক পর্যটন স্পটগুলো চালু হচ্ছে। তবে কিছু শর্ত রয়েছে বনবিভাগের। আমরা সেই শর্ত মেনে নিয়েছি। ইতোমধ্যে আমরা সুন্দরবনে পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছি। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকেই পর্যটকরা সুন্দরবন ভ্রমণ করতে পারবে।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে ২০২০ সালের মার্চ থেকে সুন্দরবনের পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ রয়েছে। চলতি বছরের এপ্রিলে তা আবারও বন্ধ হয়ে যায়। সংগঠনের তালিকাভুক্ত ৬৩টি ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ ছাড়াও বিচ্ছিন্নভাবে আরও কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সব মিলিয়ে শতাধিক প্রতিষ্ঠান হবে। এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাই দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন। অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মী কমিয়েছে। অনেকেই বেকার হয়েছেন। অবশেষে সুন্দরবনের পর্যটন স্পটগুলো খুলে দেওয়ায় ব্যবসায়ীদের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে। 

মোহাম্মদ মিলন/এমএএস