বাগবিতণ্ডার পর একপর্যায়ে বিচ্ছৃঙ্খার সৃষ্টি হয়

নীলফামারীতে তিস্তা নদীর ডান তীর ২ নম্বর স্প্যার বাঁধের ভাঙন এলাকা পরিদর্শনে এসে বন্যার্তদের তোপের মুখে দ্রুত সটকে পড়েন পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) রংপুরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মাহবুবর রহমানসহ অন্য কর্মকর্তারা। সোমবার (৩০ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টায় ঘটনাটি ঘটে।

ডিমলার ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের ভেন্ডাবাড়ী এলাকার দক্ষিণ সোনাখুলির স্প্যার বাঁধ-২ ভাঙনের ফলে বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শনে যান ওই প্রকৌশলী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পাউবো ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আশফাউদ্দৌলা প্রিন্স, উপসহকারী প্রকৌশলী আপেল মাহমুদসহ কয়েকজন ঠিকাদার।

উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা পরিদর্শনে গেলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের গাফিলতিতে স্প্যার বাঁধ ভেঙে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৪০ পরিবারসহ প্রায় তিনশত পরিবার পুরোপুরিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।

এ সময় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের লোকজন পাউবোর প্রকৌশলী ও তাদের লোকজনদের ওপর চড়াও হয়, বাগবিতণ্ডার পর একপর্যায়ে বিচ্ছৃঙ্খার সৃষ্টি হয়। ফলে স্থানীয়দের তোপের মুখে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মাহবুবর রহমান।

দ্রুত সটকে পড়েন পাউবো রংপুরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মাহবুবর রহমান

স্থানীয়রা জানায়, ৭ দিন ধরে নদীর স্প্যার বাঁধটির উজানের অংশের ভেন্ডাবাড়ী কুঠিপাড়া গ্রামে ভাঙনের মুখে ১৫০টি পরিবার অন্যত্র সরে এসেছে। এই বাঁধটিও ৪দিন থেকে ভাঙন হুমকির মুখে ছিল। সেখানে নামমাত্র কয়েকটি জিওব্যাগ ফেলে কাজ শেষ করা হয়েছে।

ভাঙ্গনে সর্বস্ব হারিয়েছে ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের রফিকুল ইসলাম। তার অভিযোগ রোববার থেকেই পাউবোর উপ-সহকারী প্রকৌশলী আপেল মাহমুদ ও তার লোকজনকে বারবার বলা সত্ত্বের প্রয়োজনীয়সংখ্যক জিওব্যাগ ফেলেনি।

ডিমলা উপজেলা আওয়মী কৃষক লীগের সদস্য সচিব আব্দুর রাজ্জাক সরকার জানান, আমার বাড়ি পাশ্ববর্তী গ্রামে। আমি গতকাল থেকেই বন্যার্তদের সঙ্গে সেচ্ছায় কাজ করে যাচ্ছি। গতকাল আমরা বলা সত্ত্বেও এখানে জিওব্যাগ ফেলা হয়নি। অল্প কয়েকটি মাটির বস্তা হলেই আজ স্প্যার বাঁধটি ভেঙে যেত না। 

পাউবো ডালিয়া ডিভিশনের উপসহকারী প্রকৌশলী আপেল মাহমুদ জানান, দুই দিনে আমরা সেখানে প্রয়োজনীয়সংখ্যক (৬০০ বস্তা) বস্তা মাটি ফেলেছি। রোববার সন্ধ্যায় পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। হঠাৎ মধ্য রাতে পানির স্রোত বেড়ে যাওয়ায় বাঁধ ভেঙেছে। এটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ, আমার গাফিলতি নয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ড রংপুর বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মাহবুবর রহমান জানান, স্প্যার বাঁধ-২ এর ৫০ মিটার অংশ গতকাল রাত ৩টায় ভেঙ্গে গেছে। গতকাল থেকে আমাদের টিম সেখানে কাজ করছে, পানি কমে গেলেই আমরা কাজ শুরু করব।

দ্রুত পরিদর্শন স্থল ত্যাগ করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সে রকম কিছু হয়নি। আমি সটকে পড়িনি, অন্য সাইটে গিয়েছি কাজ দেখতে।

মাহমুদ আল হাসান রাফিন/এমএসআর