ফাইল ছবি

বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জে নির্বাচনী সহিংসতায় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আফসার সিকদার নিহত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টায় চিকিৎসাধীন অবস্থা তিনি বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। 

নিহত আফসার সিকদার পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তিনি পেশায় মোটরসাইকেল গ্যারেজের মালিক।

মেহেন্দীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম বলেন, থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। তবে আমি শুনেছি দুই পক্ষের তর্কাতর্কির সময়ে অটোরিকশা ধাক্কা দেয় আফসারকে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

জানা গেছে, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে উটপাখি প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন সাকি কাওছার ওরফে নিপ্পন তালুকদার। তার বিপরীতে নুরুল হক জোমাদ্দার পাঞ্জাবি প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন। উভয়ের মধ্যে নির্বাচনের আগ থেকেই বিরোধ চলে আসছিল। নিহত আফসার সিকদার কাউন্সিলর প্রার্থী নুরুল হক জোমাদ্দারের নির্বাচনী কর্মী ছিলেন।

কাউন্সিলর প্রার্থী নুরুল ইসলাম জমাদ্দার অভিযোগ করে বলেন, আফসার সিকদার ওয়ার্ডে আমার হয়ে নির্বাচন করতো এবং আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী কামাল উদ্দিনের ওয়ার্ড কর্মী। বিগত নির্বাচনেও তিনি আমার কর্মী হয়ে কাজ করেছেন। এবারের নির্বাচনে সেই বিষয়টি মেনে নিতে পারছিল না আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নিপ্পন তাুলকদার। মূলত নিপ্পন তালুকদার একজন ইয়াবা ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী।

নুরুল ইসলাম জোমাদ্দার বলেন, আমার কর্মী মোস্তাফিজুর রহমান ফয়েজ রোববার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে আমার বাসা থেকে নির্বাচনী প্রচারণার উদ্দেশ্যে বের হয়ে যায়। পথিমধ্যে আরসি কলেজের (পাতারহাট রিেসক চন্দ্র কলেজ) সামনে একটি সেলুনে ঢোকে। এ সময় নিপ্পন তালুকদার ও তার সহযোগী রাকিব পোদ্দার হামলা চালায় ফয়েজের ওপর। ফয়েজ বিষয়টি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আফসার সিকদারকে জানায়। আফসার ঘটনাস্থলে যেতেই রাকিব পোদ্দার ও নিপ্পন তালুকদার তাকেও মারধর করেন। তার মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করেন।

খবর পেয়ে আমরা সেখানে গেলে নিপ্পন ও তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়। আফসারকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপপ্লেক্সে ভর্তি করলে সেখানে ডাক্তার দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য শেবাচিমে পাঠান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন আফসার।

নুরুল ইসলাম জোমাদ্দার বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে আজ দাফন শেষ করে মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হবে। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবে। কিন্তু সহিংসতাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার হওয়া উচিত।

মেহেন্দীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম বলেন, মৌখিকভাবে শুনে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে জেনেছি দুই গ্রুপ কথা কাটাকাটি করার সময় উত্তেজিত হয়ে আফসার সিকদার প্রতিপক্ষ নিপ্পন তালুকদারকে আক্রমণ করতে রাস্তার পাশের ইট তুলতে যায়। তখন একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা এসে আফসারের মাথায় আঘাত করে। এরপর মত্যু হয় তার। তবে এটিই যে সত্য ঘটনা তা নাও হতে পারে। আমরা তদন্ত করে দেখছি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত কাউন্সিলর প্রার্থী নিপ্পন তালুকদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। 

উল্লেখ্য, তৃতীয় ধাপে মেহেন্দীগঞ্জ পৌর নির্বাচন আগামী ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। এই পৌরসভায় ৯টি ওয়ার্ডে ৩৪ জন কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মেহেন্দিগঞ্জ পৌরসভায় মোট ভোটার ২৫ হাজার ৮৮৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৩ হাজার ১৭৩ জন এবং ১২ হাজার ৭১৫ জন নারী ভোটার।

এসপি