কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

কুড়িগ্রামের চিলমারী, উলিপুর, রৌমারী, রাজিবপুর ও সদর উপজেলায় ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত ৭০ হাজার মানুষ।

বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, বিকেল ৩টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি পেয়ে চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধরলার পানি কিছুটা কমে সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এতে করে ধরলা অববাহিকায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও অবনতি হয়েছে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার বন্যা পরিস্থিতি। ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চিলমারী ও উলিপুর উপজেলার ২ শতাধিক চর ও দ্বীপচরের প্রায় ৭০ হাজার মানুষ পানিবন্দি জীবনযাপন করছে। 

ভেঙে পড়েছে চরাঞ্চলের যোগাযোগ-ব্যবস্থা। যাতায়াতের দুর্ভোগে বেড়েছে বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের। হাতে কাজ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন পানিবন্দি মানুষজন। পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে রোপা-আমন, সবজিক্ষেত ও বীজতলা।

উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার হাতিয়ার চর গ্রামের বাসিন্দা রহমতুল্লাহ জানান, এক সপ্তাহ ধরে পানিবন্দি হয়ে আছি। বাড়ির চারিদিকে পানি। কোথাও কাজকর্ম নেই। পরিবার নিয়ে কষ্টে আছি। এখন পর্যন্ত কোনো সাহায্য সহযোগিতা পাইনি।

হাতিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বিএম আবুল হোসেন জানান, আমার ইউনিয়নের প্রায় সাড়ে ৩ হাজার পানিবন্দি পরিবার কষ্টে জীবনযাপন করছে। ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়ছে। বন্যার্তদের জন্য চাল বরাদ্দ পেয়েছি। যা শুক্রবার বিতরণ করা হবে।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মন্জুরুল হক জানান, বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে প্রায় ২৩ হাজার ৮০০ হেক্টর জমির রোপা-আমন, ২৮৫ হেক্টর জমির বিভিন্ন সবজিক্ষেত ও ১১৫ হেক্টর জমির বীজতলা।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, ধরলা ও তিস্তার পানি কিছুটা কমলেও ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি পেয়ে চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে বর্নাতদের জন্য ২৮০ মেট্রিক টন চাল ও ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যা বিতরণ করা হচ্ছে বলে জানান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম।

জুয়েল রানা/এমএসআর