রংপুর বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমিত নতুন ১৩৪ জন শনাক্ত হয়েছেন। এ সময়ে করোনায় আরও দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সঙ্গে সুস্থ হয়েছেন ১৭২ জন। এনিয়ে বিভাগের আট জেলায় করোনায় মৃত্যু দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২০০ জনে।

এর আগে বৃহস্পতিবার বিভাগে করোনায় তিনজনের মৃত্যু হয়। ওই দিন করোনা শনাক্ত হয় ১৬৪ জনের। শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মোতাহারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের মধ্যে শুধু পঞ্চগড় জেলার দুইজন মারা গেছেন।

এ সময় ৯৯৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৩৪ জন করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে গাইবান্ধার ৬৫, ঠাকুরগাঁওয়ের ২০, দিনাজপুরের ১৮ জন, পঞ্চগড়ের ১১, রংপুরের ১০,  কুড়িগ্রামের ৫, লালমনিরহাটের ৩ ও নীলফামারী জেলার দুইজন রয়েছেন। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ।

সবশেষ দুইজনসহ রংপুর বিভাগে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১ হাজার ২০০ জনে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে দিনাজপুরে। এ জেলায় সর্বোচ্চ ৩১৯ জন মারা গেছেন।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৮৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বিভাগীয় জেলা রংপুরে। জেলা হিসেবে সবচেয়ে কম ৬২ জন মারা গেছেন গাইবান্ধায়। এছাড়া ঠাকুরগাঁওয়ে ২৪২, নীলফামারীতে ৮৬, পঞ্চগড়ে ৭৭, কুড়িগ্রামে ৬৬ ও লালমনিরহাটে ৬৩ জন মারা গেছেন।

গত বছরের মার্চে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত বিভাগে মোট ২ লাখ ৫৯ হাজার ১১২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫৩ হাজার ৫১৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত বিভাগে সুস্থ হয়েছেন ৪৮ হাজার ৪৪৯ জন।

এদিকে রংপুরজুড়ে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমছে। একই সঙ্গে করোনা চিকিৎসার জন্য দুটি হাসপাতালে করোনা রোগীর ভর্তির সংখ্যাও কমে এসেছে। বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) জেলার দুটি করোনা হাসপাতালে ২৯ জন রোগী ভর্তি ছিলেন।

এর মধ্যে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে ২০ জন ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৯ জন। অথচ দুই সপ্তাহ আগে প্রতিদিনই গড়ে রোগী ছিলেন শতাধিক।

রংপুর বিভাগে প্রায় দুই কোটি মানুষের বসবাস। কিন্তু এখন পর্যন্ত ২৭ লাখ ৬৫ হাজার ৯৭৮ জন করোনার ভ্যাকসিন নিয়েছেন। বর্তমান এ বিভাগে ৭২ হাজার ডোজ টিকা মজুত রয়েছে।

স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, গত ৭ ফেব্রুয়ারি হতে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রংপুর বিভাগে ১১ লাখ ৮৩ হাজার ৫০ জনকে কোভিশিল্ড এর ডোজ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় ২৬ হাজার ৯৯৬ জন টিকা নিয়েছেন। ১৯ জুন থেকে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিভাগের আট জেলায় ১৪ লাখ ২২ হাজার ৪৬৬ জন সিনোফার্মের ডোজ নিয়েছেন।

এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ৬ হাজার ৬১৯ জন রয়েছে। এছাড়া গত ১৭ জুলাই থেকে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিভাগে ১ লাখ ৬০ হাজার ৪৬২ জনকে মর্ডানার টিকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৬৫৩ জন টিকা নেন।

করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মোতাহারুল ইসলাম বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নেই।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এমএসআর