রাজবাড়ী জেলার বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। পদ্মার পানি বেড়ে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বিশেষ করে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল, বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল ও বাঁধের আশপাশের এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ফলে বিশুদ্ধ পানি ও গবাদিপশুর খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। 

এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় রাজবাড়ীর তিনটি পয়েন্টেই পদ্মার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শনিবার (০৪ সেপ্টেম্বর) সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

পাউবো সূত্রে জানা যায়, রাজবাড়ীর তিনটি গেজ স্টেশন পয়েন্টে পদ্মার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া গেজ স্টেশন পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় পানি ৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৭৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পাংশার সেনগ্রাম পয়েন্টে ৭ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর সদরের মহেন্দ্রপুর পয়েন্টে ১২ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ২৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য মতে, জেলায় ১ হাজার ৪৫ হেক্টর ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে। এতে রোপা আমন, রোপা আউশ, আগাম সবজি, আখ, বীজতলা ও বাদামসহ বিভিন্ন ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। কয়েকদিনের মধ্যে এই পানি না কমলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

এদিকে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার ১৩টি ইউনিয়নের ৬৩ গ্রামের ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। খাবার, শিশুখাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। সব মিলে বন্যা দুর্গত এলাকার মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে।

দেবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হাফিজুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার ইউনিয়নের সব সড়ক ডুবে যাওয়ায় চলাচলের একমাত্র ভরসা নৌকা। বানভাসি মানুষ গবাদিপশু নিয়েও বিপদে পড়েছে।

কালিকাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসিনা পারভীন নিলুফা ঢাকা পোস্টকে বলেন, পানিতে আমার ইউনিয়নের একশ একর জমির ফসল তলিয়ে গেছে। ইউনিয়নে তিনটি সড়কের বিশাল অংশ পানির তোড়ে ধসে গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল আহাদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, উজান থেকে নেমে আসা ঢলে পদ্মার পানি বাড়ছে। এতে কয়েকটি এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে জিও ব্যাগ ফেলানো অব্যাহত রয়েছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সৈয়দ আরিফুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, জেলার পাঁচটি উপজেলার বানভাসি মানুষের জন্য ২১৩ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে ত্রাণ সামগ্রীর পরিমাণ আরও বাড়ানো হবে।

মীর সামসুজ্জামান/এসপি