আড়িয়াল খাঁ নদীর ভাঙন আতঙ্কে মাদারীপুর সদর উপজেলার মহিষেরচর (পুরাতন ফেরিঘাট বাজার) এলাকার বাসিন্দারা। গত দুদিনের ব্যবধানে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে দুটি বসতবাড়িসহ তিনটি দোকান। ভাঙনের হুমকিতে কয়েকটি বসতবাড়ি, সমজিদসহ আরও ৩০টি দোকান।

তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভাঙন প্রতিরোধে এখনো কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে ভাঙনকবলিত স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান।

সরেজমিনে দেখা যায়, আঁড়িয়াল খাঁ নদীর পার্শ্ববর্তী মহিষেরচর পুরাতন ফেরিঘাট এলাকায় ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে দুটি বসতবাড়িসহ তিনটি দোকান নদীগর্ভে চলে গেছে। নদীতে ভাঙন শুরু হওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙনের আশঙ্কায়  বাড়িঘর ও দোকানপাট অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে তারা। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে বেশ কিছু বসতবাড়ি, মসজিদসহ আরও ৩০টি দোকানপাট।

এলাকাবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে ফেরিঘাট এলাকায় ভাঙন শুরু হয়। বিগত দিনেও এই এলাকার ৩০ থেকে ৪০ টি দোকানপাটসহ বেশ কিছু ঘর-বাড়ি নদীতে নিয়ে গেছে। গত বছর নদীভাঙন তীব্র হওয়ার পর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) মহিষের চরের বেশ কিছু জায়গায় প্রায় ৬০০০ জিও ব্যাগ ডাম্পিং করেছিল।

কিন্তু এবার এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি তারা। যদি এভাবে প্রতিবছর নদী ভাঙতে থাকে, তাহলে একদিন এই পুরাতন ফেরিঘাট নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে বলে জানা তারা।

তথ্যমতে, আড়িয়াল খাঁ-সহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মাদারীপুরের বেশ কিছু এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। চলতি বছর ভাঙনের ফলে মাদারীপুরের কয়েক শ বসতবাড়ি, দোকানপাটসহ ফসলি জমি ও গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। আতঙ্কের মধ্য দিয়ে দিন কাটছে নদীতীরবর্তী বাসিন্দাদের।

ক্ষতিগ্রস্ত মজনু মোল্লা বলেন, গতকাল আমার ঘর নদীতে সব লইয়া গেছে। কোনোমতে মালসামানা নিয়ে অন্যের জায়গায় রাখছি। কয়েক বছর আগে নদীভাঙনে আমার বড় বড় গাছ আর ৪০ শতাংশ জমি হারিয়েছি। এবার আমার বাড়িটাও নদীতে লইয়া গেল। এখন কই থাকমু নিজেও জানি না।

মহিষেরচর পুরাতন ফেরিঘাট বাজারের দোকানদার অওদুদ খাঁ (৫৫) বলেন, আমরা খুব ঝুঁকির মুখে আছি, আমার পাশের তিনটি দোকান গতকাল নদীতে নিয়ে গেছে। আর মাত্র তিন-চার হাত ভাঙলেই আমার দোকনটিও নদীতে চলে যাইব। সরকার যদি এখানে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করে দিত, তাহলে ভালা হতো।

মাদারীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এবং অতিদ্রুত ভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

নাজমুল মোড়ল/এনএ