শাহিনুর ইসলাম সবুজ। দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের ইসলামপাড়া গ্রামের বেকার যুবক। ইউটিউবে গাড়ল পালনের ভিডিও দেখে অনুপ্রাণিত হন। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে দুটি গাড়ল কিনে আনেন। দেড় বছর আগে দুটি গাড়ল দিয়ে পথচলা শুরু হলেও এখন তার খামারে গাড়ল দেড় শতাধিক। ইতোমধ্যে বিক্রিও করেছেন ২০ লাখ টাকার গাড়ল। প্রথমবারের মতো ভেড়ার উন্নতজাত গাড়লের খামার করে এলাকায় সাড়া ফেলেছেন তিনি। 

জানা গেছে, গাড়ল দেখতে ভেড়ার মতো হলেও এটি গাড়ল নামেই পরিচিত। দ্রুত বর্ধনশীল হওয়ায় তার খামারে বাড়ছে গাড়লের সংখ্যা। দেশে মাংসের চাহিদা ও দাম বেশ ভালো থাকায় গাড়ল পালনে আগ্রহ দেখাচ্ছেন অনেকে। 

প্রতিটি প্রাপ্ত বয়স্ক গাড়লের ওজন ৭০-৮০ কেজি এবং বিক্রি হয় ৪৫-৫০ হাজার টাকা করে। খামারটিতে কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে স্থানীয় কয়েকজন যুবকের। দেড় বছরে প্রায় ২০ লাখ টাকার গাড়ল বিক্রি করেছেন এবং খামারে থাকা গাড়লগুলো আরও ২০ লাখ টাকা বিক্রির আশা করছেন তিনি।

গাড়ল খামারি শাহিনুর ইসলাম সবুজ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি দেড় বছর আগে ভারত থেকে শখের বসে দুটি গাড়ল কিনে আনি। এরপর এই গাড়ল দুটো কোনো রোগ বালাই ছাড়াই দ্রুত বংশ বিস্তার করে। আমি তখন আরও পাঁচটি গাড়ল কিনে আনলাম। এখন আমার খামারে দেড় শতাধিক গাড়ল রয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, দেশে গাড়লের মাংসের চাহিদা ব্যাপক এবং দামও ভালো। প্রতিটি গাড়ল ৪৫-৫০ হাজার টাকা দরে বিক্রি করি।আমি ইতোমধ্যে ১৫-২০ লাখ টাকার গাড়ল বিক্রি করেছি। আমার খামারে এখনও যে গাড়ল রয়েছে তা আরও ২০ লাখ টাকা বিক্রি হবে।

সবুজের খামারে গাড়ল কিনতে আসা রাকিব ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি প্রথমে আমার বন্ধুর গাড়লের খামার দেখতে আসি। গাড়লগুলো দেখার পর আমি নিজে দুটো কিনে নিয়ে যায়। আমি লালন-পালন শুরু করে দেখি, বাজারে ভালো চাহিদা রয়েছে। আজ আবারও ২০টি গাড়ল কিনতে এলাম।

সবুজের খামারে গাড়ল কিনতে আসা আশরাফ ঢাকা পোস্টকে বলেন, উপজেলায় এটাই প্রথম গাড়লের খামার। দেখে অনেক ভালো লাগছে। এর আগেও এই খামার থেকে গাড়ল কিনে নিয়ে গিয়েছি। আজও কিনতে আসছি।

খামারে কর্মরত শ্রমিক আব্দুল বারী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা তিনজন এই খামারে কাজ করি। মাসে ৮ হাজার টাকা বেতন পায়। সংসার মোটামুটি চলে যায়। আমরা বেকার ছিলাম। সবুজ ভাই খামার করাতে এখানে আমাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে।

নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের ভেটেনারি সার্জন ডা. শফিউল আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, নবাবগঞ্জে সবুজ নামের এক যুবক প্রথম গাড়ল পালন করছে। গাড়লের যেকোনো সমস্যা সমাধানে আমরা সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি। 

এসপি