নবীর হোসেন ও মাকছুদুর রহমান

নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হকের মোবাইল নম্বর ক্লোন করে ইউপি নির্বাচনে বিজয়ী করার কথা বলে একাধিক চেয়ারম্যান প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা চাওয়ার অভিযোগে দুই প্রতারককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে আসামিদের বিচারিক আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ১৩ সেপ্টেম্বর রাতে প্রতারক চক্রের এই দুই সদস্যকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ভাটারা থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে চরজব্বার থানার পুলিশ।

গ্রেফতাররা হলো চাঁদপুরের মতলব (উত্তর) থানার মান্দারতলী গ্রামের সেফুল ইসলামের ছেলে নবীর হোসেন (৩২) ও নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার বারাহী নগর গ্রামের মৃত রুহুল আমিনের ছেলে মাকছুদুর রহমান (৩৪)।

গ্রেফতারের বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেন চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হক। তিনি বলেন, চরওয়াপদা ইউপি বর্তমান চেয়ারম্যান প্রার্থী মনির আহমেদের (৬৪) থেকে প্রতারক চক্র ৮টি বিকাশ নম্বরে ৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।

এ ঘটনায় চরজব্বার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে ভুক্তভোগী। গ্রেফতার দুজন বিকাশের এজেন্ট হিসেবে প্রতারক চক্রকে সহযোগিতা করেন। তাদের নাম্বার থেকে হাতিয়ে নেওয়া টাকাগুলো তোলা করা হয়েছে বলে পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে।

ওসি মো. জিয়াউল হক বলেন, বিকাশ ও বিভিন্ন এজেন্টের সহায়তায় দুই লাখ ৩০ হাজার টাকা উদ্ধার হয়েছে। তারা সরকারি মোবাইল ফোন নম্বর ক্লোন করার চক্রের সঙ্গে জড়িত। দুজনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। 

উল্লেখ্য, ৯ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১১টায় সুবর্ণচর উপজেলার চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) মোবাইল নম্বর ক্লোন করে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে বিজয়ী করার কথা বলে একাধিক চেয়ারম্যান প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা চাওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়।

প্রতারণার শিকার হয়েছেন ৪ নম্বর চরওয়াপদা ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান এবং আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. মনির আহমেদ (৬৪)।

তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ওসির ব্যক্তিগত নম্বর থেকে আমার নম্বরে কল আসে। কলদাতা নিজেকে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিয়ে আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্য বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করার কথা বলে আমার কাছে টাকা চায়। এছাড়া ওসির সঙ্গে থাকা একজন বিচারককে ম্যানেজ করতে ৩ লাখ টাকা চায়।

এরপর আবার এক লাখ টাকা পাঠাতে বললে আমি সে টাকা পাঠিয়ে দেই। তারপর ওসি ফোন দিয়ে রাত ৯টায় আমাকে থানায় আসতে বলেন। আমি থানায় গিয়ে বুঝতে পারি প্রতারণার শিকার হয়েছি। এরপর থানায় একটি জিডি করি।

হাসিব আল আমিন/এমএসআর