নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার হরনি ইউনিয়নে অমাবস্যা ও পূর্ণিমার জোয়ারের পানিতে পাঁচটি গ্রামের দুই শতাধিক একর জমির আমন ধানের চারা নষ্ট হয়ে গেছে। এতে কৃষকরা পড়েছেন বিপাকে।

তবে কৃষি বিভাগ বলছে, মেঘনার মিঠাপানি ও বৃষ্টি হওয়ায় জোয়ারের পানিতে আবাদি ধানের চারার কোনো ক্ষতি হবে না। বিবর্ণ চারা আবার সতেজ হয়ে উঠবে। 

বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে দেখা যায়, প্রবল জোয়ারের পানিতে দক্ষিণ ইসলামপুর, ইসলামাবাদ, রহমতপুর, আহমদপুর, আলামিন গ্রাম, ফরাজী গ্রাম, শরীয়তপুর, গোবিন্দপুরসহ হাতিয়া উপজেলার হরনি ইউনিয়নের দুই শতাধিক একর আমন ধানের চারা নষ্ট হয়ে গেছে। এ সময় কৃষক আমির হোসেন, জহির উদ্দিন ও মাহবুব ইসলাম তাদের হতাশা ব্যক্ত করেন। বড় ধরনের লোকসানের আশঙ্কা করছেন তারা।

কৃষকরা বলছেন, বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা না হলে প্রতিদিন জোয়ার-ভাটায় ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে। তা ছাড়া এখন জলাবদ্ধতার কারণে শত শত একর জমির আমন ধান পচে যাচ্ছে।

কৃষক জহির উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, জমি লগ্নি, বীজ সংরক্ষণ, বীজ প্রস্তুত, জমি তৈরি, চারা রোপণ, আগাছা পরিষ্কারসহ নানা কাজে হাজার হাজার টাকা খরচ হয়ে গেছে। নতুন করে রোপণ করার জন্য এখন আমন ধানের চারাও নেই। তা ছাড়া কৃষি বিভাগ থেকেও তেমন কোনো সহযোগিতা পাইনি।

কৃষক আমির হোসেন বলেন, এমনিতে গত পূর্ণিমার সময় বীজতলা নষ্ট হওয়ার পর ধান আবাদ করতে গিয়ে যথেষ্ট চারা পাইনি। তাই এবারও অনেক কৃষক চারা রোপণ করতে পারেননি। তাও যদি জোয়ারের পানির প্রভাবে এই অবস্থা হয় তাহলে আমাদের দেখার কেউ নেই।

চতলা খাল পানি ব্যবস্থাপনা দলের সভাপতি আরিফুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, দরপত্র পাওয়ার পরও ঠিকাদার বেড়িবাঁধের কাজ না করায় জোয়ারের পানি ঢুকে ক্ষেতের ফসল, রাস্তাঘাট, পোল-কালভার্ট নষ্ট হয়ে যায়। কয়েক দিন ধরে জোয়ারের পানিতে ফসল তলিয়ে থাকে। তাই এখন ধানের চারা না থাকায় সামনের রবি মৌসুমে কৃষকদের চাষাবাদের জন্য প্রণোদনার দাবি জানাচ্ছি।

হাতিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, জোয়ারে ফসলের ক্ষেত প্লাবিত হলেও পানি নেমে যায়। এতে বড় ধরনের কোনো ক্ষতি হওয়ার কথা নয়। বিবর্ণ হয়ে যাওয়া আমনের চারাগুলো আবারো সতেজ হয়ে উঠবে। আগামীকাল মাঠপর্যায়ে গিয়ে খোঁজখবর নেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, উপজেলায় ৬২ হাজার হেক্টর আবাদি জমিতে এবার আমন ধানের চাষ করেছেন কৃষকরা। আমাদের পক্ষ থেকে সব সহযোগিতা অব্যাহত আছে। এ ছাড়া কোনো সুযোগ থাকলে কৃষকদের সহযোগিতা করা হবে।

হাসিব আল আমিন/এনএ