পশুপাখির বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি ও ডাকার শব্দগুলো হুবহু করে দেখাতে পারেন ঝালকাঠির এই তরুণ। পশুপাখির ২৯ রকম ডাকের পাশাপাশি বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষ ও যন্ত্রের মোট ৩৯ ধরনের আওয়াজ করে ভিন্ন আবহ তৈরি করেন তিনি। 

মুরগির বাচ্চা কিংবা উম বসা মুরগি কীভাবে ডাকে, এমনকি ডিম পেড়ে ওঠার পর কেমন আওয়াজ করে বা রাতা মুরগি কেমন শব্দ করে, তা তিনি এমনভাবে করে দেখান, বোঝার উপায় নেই এগুলো কোনো মানুষ করছে।

মো. ইমাম হোসেন বিমান। সবাই বিমান নামেই চেনেন তাকে। ঝালকাঠি সদর উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের এম এ সোবাহান মিঞার ছেলে বিমান স্থানীয় পর্যায়ে সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত আছেন। তিনি স্নাতকোত্তর (এমএসএস) পাস করেন (রাষ্ট্রবিজ্ঞান) বরিশাল বিএম কলেজ থেকে। বিয়ে করেন ২০০৬ সালে। বর্তমানে তিনি দুই সন্তানের জনক।

তিনি ১৫ বছর বয়স থেকে বিড়াল, বিড়ালছানা, পুরুষ বিড়াল, মেছো বিড়াল, কুকুর, কুকুরছানা, ব্যাঙ, সাপে ধরা ব্যাঙ, ছাগল, গরু, বাছুর, ইঁদুর, হাঁসের ছানা, শালিক, কবুতর, ঘুঘু, কাক, বাজপাখি, কুক্কা, বক ও ডাহুকের বিভিন্ন পর্যায়ের ডাক ডাকতে পারেন।

এ ছাড়া লঞ্চের ইঞ্জিনের শব্দ, বাঁশি বাজানো, শিশুর কান্না, গ্রামীণ নারীদের দ্বারা হাঁস ও মুরগির ছানা ডাকা, বৃদ্ধ দাদুর কথাবার্তা, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের কথা বলা, বাবার বাড়ি ত্যাগের সময় কনের কান্না, নারী কণ্ঠে কথা এবং একই গান নারী ও পুরুষ কণ্ঠে দ্বৈত গাওয়ার মতো পারদর্শিতা রয়েছে তার।

পশুপাখির ডাক শেখার আগ্রহ কীভাবে হলো, এমনটি জানতে চাইলে বিমান ঢাকা পোস্টকে জানান, প্রাণীদের ডাক শেখার ইচ্ছা ও প্রেরণা আসে যখন আমাদের পোষা দুটি বিড়াল ও পাঁচটি ককুর ছিল, এদের কাছে সময়টা বেশি দিতাম আর এদের আচরণ, ডাক লক্ষ করতাম।

মাঝেমধ্যে ওরা যখন ঝগড়া করত, তখন ওরা কীভাবে ডাকত, সেটা লক্ষ করে আমি চেষ্টা করতাম। এভাবেই প্রাণীদের ডাক শুনে শুনে শেখার আগ্রহ আসায় আমি চেষ্টা করতে থাকি।

ইমাম হোসেনের মনে পোষা আছে আরও দুটি শখ। তিনি কবিতা লিখবেন আর স্বপ্ন দেখেন একদিন গড়বেন একটি বৃদ্ধাশ্রম।

ইসমাঈল হোসাঈন/এনএ