প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি পর্যটন নগরী রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতুটি কাপ্তাই হ্রদের পানিতে ডুবে গেছে। কয়েক দিনের বৃষ্টি এবং পাহাড়ি ঢলের কারণে কাপ্তাই হ্রদের পানি বেড়েছে। সেতুটি হ্রদের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে প্রশাসন।

সরেজমিনে দেখা যায়, হ্রদের পানিতে তলিয়ে গেছে সেতুর পাটাতন। পানিতে ডুবতে থাকা ভাঙা পাটাতন দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে পর্যটকরা। অনেকে সেতুর দড়ি ধরে পার হচ্ছেন।

চট্টগ্রামের নাজিরহাট থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক সোয়েব সালেহিন বলেন, আগে ঝুলন্ত সেতু দেখতে এসে এমন ঘটনার মুখোমুখি হতে হয়নি। বতমানে পরিবেশ নিয়ে অনেক পর্যটকের অভিযোগ রয়েছে। সেতুটি সংস্কার করে আরও ওপরে উঠানো হোক। তাতে সেতুটি ডুবে যাবে না এবং পর্যটকদের হতাশও হতে হবে না।

পযটক পার্থ সেন বলেন, আমি পরিবার নিয়ে বেড়াতে এসেছি। ঝুলন্ত ব্রিজে এসে হতাশ হয়েছি। ব্রিজ ডুবে গিয়ে পর্যটক প্রবেশ বন্ধ হয়ে যাবে এটা ভাবিনি।

সেতু ডুবে গিয়ে পর্যটক সমাগম বন্ধ হয়ে যাওয়াতে হতাশ ব্যবসায়ীরা। টুরিস্ট বোটচালক আবদুল মান্নান বলেন, আমাদের ব্যবসা পর্যটক নির্ভর। ব্রিজ ডুবে যাওয়াতে আর পর্যটক আসবে না। এতে আমাদের চরম ব্যবসায়িক ক্ষতির মুখোমুখি হতে হবে। এই সমস্যা নিরসনে আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করি।

পর্যটক ঘাটের ইজারাদার রমজান আলী বলেন, করোনার কারণে দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পর আবার ব্যবসা শুরু করেছিলাম। কিন্তু ব্রিজে পানি উঠে যাওয়াতে আমাদের ব্যবসা আবারও বন্ধ হয়ে গেল।

ঝুলন্ত ব্রিজ সংলগ্ন পার্কে স্থানীয় পাহাড়ি পণ্য বিক্রেতা বিবেক মারমা বলেন, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে ব্রিজটি ডুবে যায়। আমাদের ব্যবসা পর্যটক নির্ভর। করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘ দিন পযটনকেন্দ্র বন্ধ থাকায় আমরা কোনো ব্যবসা করতে পারিনি। এখন পর্যটক আসা বন্ধ হলে আমাদের খুব সমস্যায় পড়তে হবে।

ব্রিজ ডুবে যাওয়ার খবরে ইতোমধ্যে কমতে শুরু করেছে পর্যটক সমাগম। যারা আসছেন তাদের ফিরে যেতে হচ্ছে পর্যটন গেট থেকেই।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পর্যটন কপোরেশন রাঙামাটির ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া বলেন, কিছু দিন আগে ব্রিজে পানি উঠলেও তা নেমে গিয়েছিল। কিন্তু গত দুই দিনের বৃষ্টির কারণে পানি বেড়ে যাওয়াতে ব্রিজ ডুবে গেছে। তাই আমরা পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছি। পানি না নামা পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা চলবে।

তিনি আরও বলেন, বষা মৌসুম প্রায় শেষ হয়ে গেছে। তাছাড়া কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্লুইস গেটগুলো খোলা আছে। তাই আমরা আশা করছি শিগগিরই পানি কমে যাবে এবং পর্যটন সংশ্লিষ্ট কাউকে ব্যবসায়িক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে না।

মিশু মল্লিক/এসপি