নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়া ও সুবর্ণচরের ১৩ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো।

সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে সকাল থেকেই নারী ও পুরুষ ভোটাররা লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিচ্ছেন।

সূবর্ণচর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নে ৫ নং ওয়ার্ডের চরলক্ষ্মী সাইক্লোন সেন্টার কেন্দ্রে ভোট দিতে এসেছেন ইব্রাহীম খলিল।  তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভোটের পরিবেশ এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাস দিলে মানুষ এখনও ভোট দিতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। তার প্রমাণ আমাদের এই কেন্দ্রটি। সকাল ৮টা থেকে এত মানুষ ভোট দিতে আসবে আমার বিশ্বাস হচ্ছে না।

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ভোট হচ্ছে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার ছয়টি ও হাতিয়া উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে। সুবর্ণচর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন হলো -চরবাটা, চরক্লার্ক, চরওয়াপদা, চর আমানউল্যাহ, পূর্বচরবাটা ও মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন। হাতিয়া উপজেলার ইউনিয়নগুলো হলো- চরঈশ্বর, চরকিং, তমরদ্দি, সোনাদিয়া, বুড়ির চর, জাহাজমারা ও নিঝুম দ্বীপ।

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে আরও জানা যায়, হাতিয়া উপজেলার সাত ইউনিয়নে ৮৬টি কেন্দ্রে ১ লাখ ৬৮ হাজার ৫৫৬ জন এবং সুবর্ণচর উপজেলার ছয় ইউনিয়নে ৫৬ কেন্দ্রে ১ লাখ ১৯ হাজার ৮১৬ জন নারী-পুরুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

নির্বাচন সুষ্ঠু করতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মোবাইল টিম, পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাবসহ বিপুল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

হাতিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার বিকল্প আর কেউ নেই। নৌকাকে জয়ী করতে আমরা ঐক্যবদ্ধ। আশা করছি, সাত ইউনিয়নে নৌকার বিজয় কোনো অপশক্তি রুখতে পারবে না। 

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রবিউল আলম ঢাকা পোস্টকে  বলেন, সুষ্ঠু ভোটগ্রহণে সবধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ভোট শেষে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোট গণনা করে ফল ঘোষণা করা হবে। এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ চলছে।

জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ চলছে। যে কোনো প্রার্থীর ক্ষেত্রে নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলতে হবে। যদি কেউ নির্বাচনী আচরণবিধি ভাঙেন তবে নির্বাচন কমিশনের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, হাতিয়া উপজেলার সাত ইউনিয়নের নির্বাচনকে সুষ্ঠু করতে ১৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, তিনজন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ৬৭৫ জন পুলিশ, ১ হাজার ৪৬২ জন আনসার, ৬ প্লাটুন কোস্টগার্ড, ২ প্লাটুন বিজিবি, র‌্যাবের পাঁচটি টিম, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাতটি ভ্রাম্যমাণ টিম ও তিনটি স্ট্রাইকিং ফোর্স দায়িত্ব পালন করছে।

তিনি আরও বলেন, সুবর্ণচরের ছয় ইউনিয়নের নির্বাচনী এলাকার নিরাপত্তায় ১১ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, দুজন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ৫৫৭ জন পুলিশ, ৯৫২ জন আনসার, ৬ প্লাটুন বিজিবি, র‌্যাবের আটটি টিম, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ছয়টি মোবাইল ফোর্স ও দুটি স্ট্রাইকিং ফোর্স নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করছেন।

হাসিব আল আমিন/এসপি