যশোরের নওয়াপাড়া পৌরসভায় প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোটগ্রহণ চলছে। সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। তবে রোববার মধ্যরাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত মুষলধারে বৃষ্টি হওয়ায় পৌরসভার অধিকাংশ ভোটকেন্দ্রে হাঁটু সমান পানি জমেছে। এই পানি মাড়িয়ে ভোটাররা ভোট দিতে পেরে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।

সকাল ১০টায় নওয়াপাড়া মহিলা কলেজে গিয়ে দেখা যায়, এই কেন্দ্রের প্রবেশ মুখ থেকে ভোটকেন্দ্রে হাঁটু সমান পানি। ভোটাররা রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন। মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীর এজেন্টদেরর কাছ থেকে স্লিপ নিয়ে হাঁটু পানি মাড়িয়ে ভোট দিতে যাচ্ছেন। 

এই কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা নজরুল ইসলাম নামে এক ভোটার বলেন, সারারাত বৃষ্টি হয়েছে। সকালে কেন্দ্রে এসে দেখি হাঁটু পানি। কষ্ট হলেও ভোট দিতে এসেছি। 

রহিমা বেগম নামে এক ভোটার বলেন, আমি ভোট দিয়েছি। ইভিএমে ভোট দেবো বলে ভয় হচ্ছিল। ভোটকেন্দ্রে এসে সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার সব নির্দেশনা দিয়েছে। সে অনুযায়ী ভোট দিয়েছি। প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোট দিতে পেরে খুব খুশি। তবে এই ভোট উৎসবে কিছুটা বাঁধ সেধেছে বৃষ্টি আর হাঁটু পানি। মাঝে মাঝে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিও হচ্ছে। 

প্রিসাইডিং অফিসার মেহেদী হাসান বলেন, এই কেন্দ্রের ভোটার ২ হাজার ২৬১ জন। ঘণ্টায় ১৪৭টি ভোট কাস্ট হয়েছে। গতকাল থেকে মুষলধারে বৃষ্টি হওয়ায় ভোটকেন্দ্রেগুলোতে হাঁটু পানি জমেছে।

আলহেলাল ইসলামী একাডেমি ভোটকেন্দ্রেও পানি মাড়িয়ে ভোটারা ভোট দিতে আসছেন। তবে ভোটারদের উপস্থিতি কম। সহকারী প্রিসাইডিং অফিসাররা জানিয়েছেন, বিরূপ আবহাওয়ার কারণে ভোটকেন্দ্রে উপস্থিতি কম। 

এই কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা সালেহা খাতুন বলেন, ভোটকেন্দ্রের পরিবেশ ভালো। ভোট দিতে কোনো সমস্যা হয়নি। 

এই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার এস এম ফারুক হোসেন বলেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী ভোটগ্রহণ চলছে। সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এখন পর্যন্ত কোনো প্রার্থীর অভিযোগ পায়নি। ভোটগ্রহণের প্রথম দুই ঘণ্টায় ৫০টি ভোট কাস্ট হয়েছে। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুর রহমান জানান, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ভোটগ্রহণ হচ্ছে। এ নির্বাচনে মেয়র পদে তিনজন, ৯ ওয়ার্ডে সংরক্ষিত নারী আসনে ১১ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৫৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ পৌরসভার মোট ভোটার ৬৩ হাজার ১৮৬ জন। যার মধ্যে পুরুষ ভোটার ৩১ হাজার ১৪১ জন এবং নারী ভোটার ৩২ হাজার ৪৫ জন। ৩০টি কেন্দ্রে ১৮৪টি বুথে চলছে ভোটগ্রহণ। তবে গত রাতে মুষলধারে বৃষ্টি হওয়ায় অধিকাংশ কেন্দ্রে পানি জমে গেছে। ফলে সকাল থেকেই ভোটারের উপস্থিতি কম ছিল। 

বিএনপির প্রার্থীহীন এ নির্বাচনের নিরাপত্তায় ১২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ৫০০ পুলিশ সদস্য, তিন প্লাটুন বিজিবি সদস্য ছাড়াও র‌্যাব ও গোয়ান্দা বিভাগের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। 

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১১ এপ্রিল ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও করোনার কারণে তা স্থগিত হয়ে যায়।

জাহিদ হাসান/এসপি