২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে নার্সদের অবহেলায় একই সঙ্গে দুই শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ করেছেন স্বজনরা। হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

মৃত শিশুদের স্বজনরা অভিযোগ করেন, গতকাল রাত থেকে তাদের শিশুদের শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। শিশুদের নাকে লাগানো অক্সিজেনের নল খুলে যাচ্ছিল। এ সময় দায়িত্বরত নার্সদের ডেকেও সাড়া মেলেনি। তারা ওয়ার্ডে না এসে তাদের রুমে মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। 

মৃত দুই শিশুর একজনের বাড়ি রাজিবপুর উপজেলার মরিচাকান্দি গ্রামে এবং অপরজনের বাড়ি কুড়িগ্রাম পৌরসভার ছয়ানী পাড়া এলাকায়। 

কুড়িগ্রাম পৌরসভার ছয়ানী পাড়া এলাকার শিশুটির বাবা দিলীপ চন্দ্র জানান, গত শনিবার হাসপাতালে তার স্ত্রী অঞ্জনা একটি কন্যা সন্তান প্রসব করেন। স্বাভাবিক প্রসব হলেও জন্মের সময় মাথায় আঘাত পেয়েছে জানিয়ে শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। এরপর তাকে ইনজেকশন ও স্যালাইন দেওয়ারও ব্যবস্থাপত্র দেন দায়িত্বরত চিকিৎসক। 

তিনি বলেন, ওষুধ আর স্যালাইন নিয়ে এসে নার্সদের দিয়ে বাচ্চাকে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি। তারা আমার কথা শোনেননি। তারা রুমে বসে মোবাইলে লুডু খেলেন, ফেসবুক চালান। আপনারা দেখেন এখনও স্যালাইন পড়ে আছে। সোমবার দুপুরে বাচ্চার নাক থেকে অক্সিজেনের লাইন খুলে গেলে তা ঠিক করার জন্য নার্সদের ডাকি। কিন্তু তারা ধমক দিয়ে আমাদের ফিরিয়ে দেন। কিছুক্ষণ পর বাচ্চাটা মারা যায়। নিজের বাচ্চার মৃত্যুর জন্য নার্সদের অবহেলাকে দায়ী করেন দিলীপ চন্দ্র। 

অপর শিশুর বাবা র‌বিউল ইসলাম বলেন, বাচ্চাকে ওষুধ দিতে ডাকলে নার্সরা আসেন না। চিকিৎসার অভাবে কখন বাচ্চা মারা গেছে আমরা টেরও পাইনি। তারা (নার্সরা) মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত। ঠিক মত সেবা না করায় আমার অবুঝ শিশুটি মারা গেছে।

এ ব্যাপারে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শহিদুল্লাহ লিংকন জানান, শিশু দুটি গুরুতর অসুস্থ থাকায় তাদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করতে চাইলে স্বজনরা অস্বীকৃতি জানান। 

এদিকে শিশু ওয়ার্ডের ইনচার্জ কাকলী বেগম জানান, শিশু ওয়ার্ডে ৪৮ জন রোগীর ধারণ ক্ষমতা থাকলেও সেখানে বর্তমানে ১১৮ জন শিশু চিকিৎসা নিচ্ছে। তবে স্বজনদের অভিযোগের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

জুয়েল রানা/আরএআর