পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় নৌপুলিশ ফাঁড়ির সদস্যদের ধাওয়ায় সুজন চৌকিদার (৩০) নামে এক জেলের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার চর বালিয়াতলীর ডোশ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

এ সময় উত্তেজিত জনতা লালুয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির এএসআই মামুনসহ চার পুলিশ সদস্যকে অবরুদ্ধ করে রাখে। এতে নৌপুলিশের দুই সদস্য ও তাদের বহনকারী ট্রলারের মাঝিসহ তিনজন আহত হয়েছেন। 

পুলিশের দাবি- সুজন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। সুজন ওই এলাকার আব্দুস সত্তার হাওলাদারের ছেলে।  

এদিকে পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে কলাপাড়া ও মহিপুর থানা থেকে শতাধিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এছাড়া কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদুল হক এবং সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আলী আহম্মেদ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এ সময় তারা উত্তেজিত লোকজনকে নিবৃত করতে নানা রকম আশ্বাস দেন। পরে দোষীদের শাস্তির আশ্বাসে অবরুদ্ধ পুলিশ সদস্যদের ছেড়ে দেয় জনতা। 

সুজনের সঙ্গে থাকা জেলেরা জানান, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চর বালিয়াতলী সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের প্রথম বয়ার কাছে ট্রলার নিয়ে মাছ ধরার সময় লালুয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ট্রলারটি তাদের ধাওয়া করে। নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরার অভিযোগে তাদের ধাওয়া করে ডোশের খালের অভ্যন্তরে নিয়ে যায় পুলিশ। এ সময় ট্রলারে থাকা অপর চার জেলে পালিয়ে গেলেও সুজন ট্রলারেই থেকে যায়। নৌপুলিশ ফাঁড়ির এএসআই মামুনসহ চার পুলিশ সদস্য ওই ট্রলারে উঠে সুজনকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পায়। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।  

স্থানীয় ট্রলারের মাঝি মাসুদ চৌকিদার জানান, সকালে বাবলাতলা ডোশ এলাকা থেকে পাঁচ জেলেসহ একটি মাছ ধরার ট্রলার নিয়ে সাগরে রওয়ানা দেন তারা। এ সময় পায়রা বন্দর নৌপুলিশের এএসআই মামুনসহ চার পুলিশ সদস্য একটি ট্রলার নিয়ে তাদের ধাওয়া করে। পরে ঘণ্টাব্যাপী ধাওয়া করে জেলেদের ট্রলার ফের বাবলাতলা ছোট ডোশের খালে প্রবেশ করে। এ সময় পাঁচ জেলের মধ্যে চারজন পালিয়ে গেলেও জেলে সুজনকে আটক করে পুলিশ সদস্যরা মারধর করেন।

পটুয়াখালীর সহকারী পুলিশ সুপার আলী আহম্মেদ জানান, অবরুদ্ধ পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে। 

কাজী সাঈদ/আরএআর