মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছিলেন মনতাজ আলী। কাউকে না জানিয়ে বাড়ি ছেড়েছিলেন মাস ছয়েক আগে। দীর্ঘদিন পথে পথে ঘুরেছেন। শেষে পৌঁছে যান রাজশাহীতে।

রাজশাহী থেকে শেষবারের মতো কফিনবন্দি হয়ে ঘরে ফিরলেন ঘরে। মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের মর্গ থেকে মরদেহ নিয়ে যান স্বজনরা।

মনতাজ আলী পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ থানার চরতিস্তাপাড়ার এলাকার নালকু মুন্সির ছেলে। সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল সোয়া ৮টার দিকে রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

নগর পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ১৭ সেপ্টেম্বর সকাল ৭টার দিকে নগর ভবন এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত হন মনতাজ। খবর পেয়ে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ তাকে রামেক হাসপাতালে নেয়। তখনও তার নাম-পরিচয় জানতে পারেনি পুলিশ।

পুলিশের তত্ত্বাবধানেই চলছিল তার চিকিৎসা। বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণের নির্দেশে এসআই আলী আকবর তার সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছিলেন। পরিচয়ে শনাক্তের চেষ্টাও চলছিল একইসঙ্গে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বার্তা দিয়ে তার পরিচয় শানাক্তের চেষ্টা করে পুলিশ।

টানা ৩ দিন চিকিৎসার পর হার মানেন মনতাজ। পরে বোয়ালিয়া মডেল থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়। মরদেহের পরিচয় শনাক্তে পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা আলী আকবর সিআইডির সাহায্য নেন। শেষে সিআইডি মৃতের ফিঙ্গার প্রিন্ট নিয়ে এনআইডি সংগ্রহ করে। তা থেকেই বেরিয়ে আসে পরিচয়।

নাম-পরিচয় পেয়ে দেবীগঞ্জ থানায় যোগাযোগ করে বোয়ালিয়া থানা পুলিশ। সেখানে পাওয়া যায় মনতাজ আলীর আত্মীয়-স্বজনের। মঙ্গলবার স্বজনরা রামেক হাসপাতালে এসে মরদেহ শনাক্ত করেন। পরে মরদেহ স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করে পুলিশ।

মনতাজ আলীর ভাতিজা মনিরুল ইসলাম (২৭) বলেন, তার চাচা একজন বাক ও মানসিক প্রতিবন্ধী। তার স্ত্রীও মানসিকভাবে অসুস্থ। তাদের ১১ বছরের একটি কন্যাসন্তানও আছে। ৬ মাস আগে কাউকে না জানিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান তিনি। এরপর আর ঘরে ফেরেননি।

নগর পুলিশের মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, এই ঘটনায় মানবিক ও পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছে বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ। পরম নিষ্ঠার সাথে অজ্ঞাতনামা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ব্যক্তির চিকিৎসা চালিয়েছে পুলিশ।

ফেরদৌস সিদ্দিকী/এমএসআর